ভোলার মনপুরায় আবারও এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি (অপর এক ধর্ষণের অভিযোগে বহিষ্কৃত) এনাম হাওলাদারের বিরুদ্ধে। ১৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে মনপুরা থানায় এনামকে আসামি করে মামলা দিয়েছেন ওই গৃহবধূ।

 

মনপুরা থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ চেষ্টার এজাহার গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করতে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশের খাতায় আগের মামলায় এনাম পলাতক আসামি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এনামের বাবা জাহাঙ্গীর হাওলাদার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

প্রতিবারই অপকর্মের পর ছেলেকে নির্দোষ দাবি করেন জাহাঙ্গীর। ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনাও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এমনকি শুক্রবার দুপুরে ওই নারী অভিযোগ দিতে স্বামীসহ থানায় আসার পথে বাংলাবাজার এলাকায় প্রভাবশালীদের বাধার মুখে পড়েন। স্থানীয়ভাবে উপযুক্ত বিচার করার আশ্বাস দেয়া হয়। এক পর্যায়ে এদের উত্তর সাকুচিয়া চেয়ারম্যান বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে জানাজানি হলে শনিবার ওই গৃহবধূকে ছেড়ে দিলে তিনি মনপুরা থানায় এসে এনামের অপকর্মের চিত্র তুলে ধরে মামলা দেন।

ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। ওই নারী তার আত্মীয় হওয়ায় ঘটনা তাকে জানানো হয়। তিনি ঢাকা থেকে ফিরে অভিযুক্তের বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন। এর বেশি তিনি জানেন না।

এনামের বিরুদ্ধে একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের কাহিনীর জন্য এলাকায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর আগে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ বাড়ির সামনের হারিস রোকেয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষককে প্রকাশ্যে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এনাম। এ নিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষকরা বিচার দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলায় এনামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি আদেশ রয়েছে। ওই সময় এনামকে ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিকে ওই স্কুলের চিলে কোঠা ছিল এনামের অপকর্মের কেন্দ্র। গত মাসে মনপুরা ইউনিয়নের মোঃ জমিম উদ্দিন নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে ২৬ হাজার টাকা লুটে নেয় এনাম। এমন নানা অভিযোগ এখন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

এনামের বাবা মোঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদার জানান, তার ছেলে ও তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। সামনে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। তাই এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কৃষক ঘরের বেড়া কেটে কেউ একজন প্রবেশ করেছে শুনেছেন। তার ছেলে প্রবেশ করেনি বলেও জাহাঙ্গীর হাওলাদার দাবি করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ কাজল জানান, তার এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডে সরদার বাড়ির বেশিরভাগ লোকজন পাশের একটি বাজারে ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে যান। পুরুষশূন্য ঘরে প্রবেশ গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়।

অপরদিকে ওই নারীর একটি ভিডিও বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে এলাকায়। ওই নারী জানান, তিনি চিৎকার দিতে গেলে জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে এনাম তার গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে বিবস্ত্র অবস্থায় এনামের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ছুটে গিয়ে পাশেই ভাসুরের ঘরে আশ্রয় নেন। এসময় অন্যান্য ঘরের নারীরাও ছুটে আসেন। ততক্ষণে পালিয়ে যায় এনাম। সবাই তাকে দেখেছে।

আর টিভি অনলাইন

মন্তব্য করুন