রাজধানী কলম্বোসহ শ্রীলঙ্কার আটটি স্থানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২৯০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। এই জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা সাথে কারা জড়িত তাদের পরিচয় সম্পর্কে শ্রীলঙ্কান পুলিশের তরফ থেকে এখনও স্পষ্ট কোন বক্তব্য আসে নি। যদিও দুপুরে একজন মন্ত্রী দাবী করেছেন, হামলাকারীদের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে এবং ইতিমধ্যে সাতজন সন্ত্রাসীকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।

শ্রীলঙ্কান প্রভাবশালী ইংরেজী দৈনিক ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে দুইজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেছে যারা ইসলামী সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত।

ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রবিবার সকালে যে ছয়টি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে, এর সবগুলোই আত্মঘাতী হামলা। পরে দুপুরের দিকে কলম্বোর আরও দুটি স্থানে বোমা হামলা হয়েছে।

সকালে যে তিনটি হোটেলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে তার মধ্যে একটি হলো হোটেল সাংরি-লা। ডেইলি মিররের সোর্স জানিয়েছে, ২০ এপ্রিল ওই হোটেলের ৬১৬ নাম্বার কক্ষে দুইজন ইসলামী সন্ত্রাসী অবস্থান করছিলো।

ভারতের নিউজ এইটিন চ্যানেল এবং শ্রীলঙ্কার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ওই দুইজন সন্ত্রাসীর নাম ও ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এদের এক সন্ত্রাসীর নাম জাহরান হাশিম এবং আরেক আত্মঘাতী সন্ত্রাসী আবু মোহাম্মদ।

ছবি: সন্দেহভাজন হামলাকারী ইসলামী সন্ত্রাসী জাহরান হাশিম (ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত)

হোটেলের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে ৬১৬ নাম্বার কক্ষে থাকা সন্দেহভাজন ওই দুই ইসলামী সন্ত্রাসী হোটেলের ক্যাফেটেরিয়া ও করিডরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর আর এদের হোটেলে দেখা যায়নি।

তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, সন্দেহভাজন ওই দুই সন্ত্রাসী ২৫ কেজি ওজনের সি-৪ ধরনের বিস্ফোরকের মাধ্যমে সাংরি-লা হোটেলে আত্মঘাতী বোমা হামলা করেছে।

ডেইলি মিরর আরো উল্লেখ করেছে, অভিযুক্ত দুই হামলাকারী হোটেলেরে যে কক্ষটিতে ছিলেন সেটি ভাঙার পর তদন্তকর্মকর্তারা সেখানে ইসলামী সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত কিছু আলামত খুঁজে পেয়েছেন।

Image may contain: one or more people

ছবি: সন্দেহভাজন হামলাকারী ইসলামী সন্ত্রাসী আবু মোহাম্মদ (ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত)

তবে সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি এবং এজন্য এখনও এটা অস্পষ্ট আত্মঘাতী হামলাকারীরা স্থানীয় নাকি ভ্রমণ ভিসা নিয়ে বিদেশি পর্যটক হিসেবে দেশটিতে প্রবেশ করে অবস্থান করছিলো। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে মিরর।

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান হামলার ১০ দিন আগে আগাম সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিলেন এবং সেখানে দেশটির একটি ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই সতর্কবার্তায় শ্রীলঙ্কার গির্জা ও ভারতীয় দূতাবাসে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছিলো। ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত (এনটিজে) নামক ওই উগ্রবাদী সংগঠনটি গতবছর বৌদ্ধ মূর্তি ভেঙ্গে সবার নজরে আসে।

ডেইলি মিররসিএন এন নিউজ ১৮

মন্তব্য করুন