ঢাকার সাভারে এক নারী ধর্ষণের ঘটনায় আটক এক আসামিকে রাতভর থানায় রেখে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ৪ জুলাই রোববার সকালে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাভার মডেল থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

 

৩ জুলাই শনিবার সকালে সাভারের সিআরপি-ডগরমোড়া এলাকায় আলিফ ফাউন্ডেশন নামক একটি ফিজিওথেরাপি সেন্টারে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী শনিবার দুপুরে সাভার মডেল থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সকালে এক নারীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় ডগরমোড়া সিআরপি এলাকার আলিফ ফাউন্ডেশন নামক ফিজিওথেরাপি সেন্টারে দলবদ্ধ একটি চক্র। সেখানে আগে থেকেই অজ্ঞাত ৭ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। ভুক্তভোগীর কিছুটা সন্দেহ হলে সেখান থেকে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তাকে অন্যরা মুখ চেপে ধরে একটি কক্ষে আটকে রাখে। এরপর সাত জনের পাহারায় এক যুবক ওই নারীকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ঘটনার পরপর ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শনিবার দুপুরে সাভার মডেল থানায় ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশের এসআই মো. সৌকত শনিবার রাতে ‘আলিফ ফাউন্ডেশন ফিজিওথেরাপি’তে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলে রুবেল ও ম্যানেজার ইকবাল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাতভর থানায় আটকে রেখে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে থেরাপি প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলে রুবেলকে রোববার সকালে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার এসআই মো. সৌকত বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে শনিবার রাতে আলিফ ফাউন্ডেশনের কর্ণধার রফিক কোম্পানির ছেলে রুবেল ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ইকবাল মিয়াকে আটক করা হয়।

রাতভর থানায় আটকে রেখে দেনদরবার শেষে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে সকালে রুবেলকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন কিনা তা জানতে তাকে আটক করা হয়েছিল। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ডগরমোড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জলিল জানান, রফিক (কোম্পানি) ও তার ছেলে রুবেল দীর্ঘদিন ধরে তার ছয়তলা বাড়িতেও রোগী ভাড়া দেওয়ার নামে, অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এমন অভিযোগে পুলিশ ওই বাড়িতে কয়েকবার অভিযানও চালিয়েছে। আর ধর্ষণের অভিযোগে আটক আসামি রুবেলকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

রাতভর থানায় আটকে রেখে আসামি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, টাকার বিনিময়ে আসামি ছাড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, দুজনের মধ্যে একজনকে নির্দোষ মনে হয়েছে বলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

যুগান্তর

মন্তব্য করুন