চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা-নিপীড়ন, ঘরবাড়ীতে অগ্নি সংযোগ-লুটপাট, প্রতিমা ভাংচুর ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে সংখ্যানুপাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বের দাবীতে গতকাল মঙ্গলবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামে হাজার হাজার নারী-পুরুষ অভূতপূর্ব মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু করে জামালখান সড়ক, চেড়াগী পাহাড় মোড় হয়ে মোমিন রোড হয়ে আন্দরকিল্লা পর্যন্ত এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার নাগরিকরা যোগ দেন। চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিক সমাজ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, এডাব, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, চট্টগ্রাম আইনজীবী ঐক্য পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন এই মানববন্ধনে যোগ দেয়। মহিলা পরিষদের নেত্রী-কর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে ও গলায় বিভিন্ন দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে সাম্প্রাদায়িক সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানায়। এডাবসহ বিভিন্ন এনজিও কর্মীরাও গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়েছিলেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। বিকাল পৌনে ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রায় পৌনে ১ঘন্টা এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ১০৫ ফুট দীর্ঘ ব্যানার নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় নগরবাসীর। দীর্ঘ এই মানববন্ধনের কারণে জামালখান এলাকায় যান জটের সৃষ্টি হয়। গতকালের এই অভূতপূর্ব মানববন্ধনে বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক শিক্ষাবিদ ডঃ সানজীদা খাতুন, অধ্যাপক হায়াত মামুদ, লেখক দ্বিজেন শর্মা, লেখক মফিদুল হক, কবি সাংবাদিক আবুল মোমেন, শিল্প সমালোচক অধ্যাপক আবুল মনসুর, মাস্টারদা সূর্যসেনের সহযোগী প্রবীণ বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী, মহিলা পরিষদ নেত্রী নূরজাহান খান, অধ্যাপক ঢালী আল মামুন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুহাম্মদ ইদ্রিস, এডভোকেট রানাদাশ গুপ্ত, সাংবাদিক নাছির উদ্দিন চৌধুরী, গ্রুপ থিয়েটার ফোরামের সেক্রেটারী অশোক বড়ুয়া সহ বিভিন্ন সংস্কৃতিসেবী ও সাধারণ জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই মানববন্ধনে অংশ নেন।

ভোরের কাগজ, ১৭ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন