সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ইসলাম ধর্ম ও কোরআন নিয়ে কথিত কটূক্তি অভিযোগে রাধাকান্ত বিশ্বাস (২৮) নামের এক হিন্দু যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
২৬ আগস্ট বুধবার ভোররাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মো. বদরুজ্জামান। তিনি জানান, রুবেল মিয়া নামে কটূক্তিকারীর এক ফেসবুক বন্ধু বাদী হয়ে আজ রাধাকান্ত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। এটি ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় দায়ের করা প্রথম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা।
গ্রেপ্তার রাধাকান্ত বিশ্বাস উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের নিজ ঘিলাছড়া (মোকামবাজার) গ্রামের রায় মনি বিশ্বাসের ছেলে। রাধাকান্ত পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে একই গ্রামের রুবেল মিয়া তার ফেসবুক বন্ধু রাধাকান্ত বিশ্বাসের ‘হিন্দু বিবাহের শক্তি’ শিরোনামে ছবিযুক্ত একটি পোস্ট দেখতে পান।
পোস্টে লেখা ছিল, ‘পৃথিবীর সকল ধর্মে বিবাহ একটা সেক্সুয়াল চুক্তি। কিন্তু হিন্দু ধর্মে বিবাহ একটা ব্রত, ধর্মানুষ্ঠান। ইসলাম ধর্মে কোরআনের কালেমা দ্বারা বিবাহ পড়ানো হয় কিন্তু “তালাক” উচ্চারণ করলেই সব শেষ! কালেমার এই শক্তি! হিন্দু বিবাহে কোনো “তালাক” নেই। এ থেকে কী প্রমাণ হয় না, কোরআনের আয়াতের চেয়ে বেদ মন্ত্রের শক্তি বেশি?”
রাধাকান্ত বিশ্বাসের পোস্টটিকে ভাইরাল করিয়ে স্থানীয় ধর্মান্ধ মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টির প্রয়াস চালানো হয়। এদিন সন্ধ্যার পর থেকে স্থানীয় মোকামবাজারে জড়ো হতে থাকে উগ্রপন্থী ধর্মান্ধ মুসলিমরা। খবর পেয়ে মোকামবাজারে উপস্থিত হন ঘিলাছড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মছব্বির ও ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি আবুল বাসার মো. বদরুজ্জামানসহ একদল পুলিশ।
এসময় কটূক্তিকারীকে দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় নেওয়া হবে বলে পুলিশ আশ্বাসে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে ২৬ আগস্ট ভোর রাতে রাধাকান্ত বিশ্বাসকে আটক করে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে ওসি আবুল বাসার মো. বদরুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন, ‘চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে আশ্বাস প্রদানের দুই ঘণ্টার মধ্যে কটূক্তিকারী রাধাকান্ত বিশ্বাসকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ আসামিকে সিলেট আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।