হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে রাস্তা থেকে উঠিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে তরুণীকে সিএনজির ভেতরে গণধর্ষণের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেফতারকৃত দুই যুবক।
১২ এপ্রিল সোমবার বিকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ধর্ষক সুজন মিয়া ও সায়মন আহমেদ শামীম। এ ঘটনায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক এখনো পলাতক রয়েছে।
সদর থানার ওসি মো. মাসুক আলী জানান, গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেট থেকে ২৫ বছরের এক তরুণী শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজে এসে নামেন। তিনি বানিয়াচং উপজেলার গুনই গ্রামে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। সেখানে অপেক্ষার সময় সিএনজিচালকসহ দুই যুবক তাকে ফুসলিয়ে হবিগঞ্জে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন ওই তরুণী বুঝতে পারেন তাদের কুমতলব।
একপর্যায়ে রাত ৮টায় তিনি একটি টমটমে (ইজিবাইকে) উঠে হবিগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। কলিমনগরের স্পিডব্রেকারের কাছে এসে টমটমের চার্জ শেষ হয়ে যায়। এদিকে ওই সিএনজি অটোরিকশাটি ইজিবাইকের পিছু ছুটে। কলিমনগরে পৌঁছে সিএনজিচালক জনি মিয়া কৌশলে ওই তরুণীকে তার সিএনজি অটোরিকশাতে তুলে নেয়। ওই সিএনজি অটোরিকশাতে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজে পাওয়া যুবকরাও ছিল।
পরে সিএনজিচালক দ্রুত চালিয়ে ধুলিয়াখাল-মিরপুর সড়কে প্রবেশ করে লস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের অদূরে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সিএনজির ভেতরে ওই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একের পর এক তিনজন ধর্ষণ করে। তারা ওই তরুণীকে নিয়ে হবিগঞ্জে আসার পথে চরহামুয়া পয়েন্টে আসামাত্র দোকানপাট দেখে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ঘেরাও করে সিএনজিসহ দুই ধর্ষককে আটক করেন।
তখন সিএনজিচালক জনি মিয়া পালিয়ে যায়। আটক দুই যুবক চুনারুঘাট উপজেলার ঝিকুয়া গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (২৫), কাছম আলীর ছেলে সায়মন আহমেদ শামীমকে (২০)। স্থানীয় লোকজন উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। ওই তরুণীকে সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিএনজি অটোরিকশাটিও জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে গণধর্ষণের মামলা করেছেন। সোমবার বিকালে শামীম ও সুজন মিয়াকে হবিগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করলে তারা ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
ওই তরুণী জানান, দুই বছর আগে রাজু মিয়া নামের এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের ৬ মাসের মাথায় বানিয়াচংয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্বামী মারা যান। এরপর থেকে তিনি সিলেটে একটি কোম্পানিতে চাকরি করছেন। লকডাউনে কোম্পানি ছুটি থাকায় ঘটনার দিন বাড়ি ফেরার উদ্দেশে তিনি রওনা হন।