ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বিজিবিসহ অন্তত ১৫ জন। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- বকুয়া ইউনিয়নের রুহিয়া গ্রামে নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব (৩০) ও জহিরুলের ছেলে সাদেক মিয়া (৪০) এবং বহরমপুর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী জয়নাল।
আহতদের মধ্যে চোখে গুলিবিদ্ধ আবুল কাসেম নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি ১৪ জনকে ভর্তি করা হয় দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এলাকাবাসী জানায়, বহরমপুর গ্রামের মাহাবুব আলী গত ৬ মাস আগে একটি গরু ক্রয় করেন। সেই গরু মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় যাদুরানী বাজারে বিক্রি করার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এ সময় বেতনা ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা ভারতীয় গরু মনে করে ক্যাম্পে গরুটি নিয়ে যাওয়ার জন্য মাহাবুবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে গেলে মাহাবুবের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে বিজিবি গুলি ছুড়লে যাদুরানী বাজারের উদ্দেশে আসা দুইজন পথচারীসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন বিজিবি সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন।
ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, বিজিবির একটি পেট্রল টিম চারটি গরু সিজ করে ফেরার পথে চোরাকারবারীরা এলাকাবাসীকে নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ বিজিবির ওপর হামলা করে। তাদের অনুরোধ করা হলেও কোনো কথা শুনেনি। একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে বিজিবির অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় চারজন বিজিবি সদস্য আহত হওয়ার পর কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করা হয়। এতেও পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বিজিবি গুলি ছোড়ে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল বলেন, “আত্মরক্ষার্থে ও সরকারি সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রথমে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে চোরাকারবারিদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। এতেও তারা শান্ত হয়নি। এসময় চোরাকারবারিরা বিজিবির অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য টানা হেঁচড়া করার এক পর্যায়ে বিক্ষিপ্ত কিছু গুলিবর্ষণ হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে এবং এতে ৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে আমরা জেনেছি।”
নিহতরা চোরাকারবারে সঙ্গে জড়িত কি না- এ প্রশ্নে বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, “নিহতরা অবশ্যই চোরাকারবারি দলের সঙ্গে জড়িত, নাহলে তারা কেন রাস্তার মাঝ পথে পরিকল্পিতভাবে বিজিবির টহল দলের উপর আক্রমণ করল।
সূত্রঃ বিডিনিউজ