ফেনীর পরশুরামে সালিশ বিচারে এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার হয়ে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৬ জুলাই) রাতে মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালিশের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকায় বিষয়টি দফারফা করেন। তবে তাৎক্ষণিক পাঁচ হাজার টাকা ভিকটিমের পরিবারকে দেওয়া হলেও এখনও বাকি টাকা তারা পাননি। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ।

 

ওই গ্রামের আবু বক্করের স্কুলপড়ুয়া ছেলে দিপুসহ গ্রামবাসী জানায়, শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর বারোটার দিকে ধর্ষণের শিকার কিশোরী (১৪) মাছ ধরতে বাড়ির পাশের জমিতে যায়। এ সময় হৃদয় হাসান (১৮) নামের এক টমটম চালক তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় ও ধর্ষণ করে। ভিকটিমের চিৎকারে গ্রামের লোকজন এগিয়ে এলে ধর্ষক হৃদয়কে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। হৃদয় ওই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।

গ্রামবাসী জানায়, এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান ভুট্টো, ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান, ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন ( নেজাবলি), মাছ ব্যবসায়ী ইউনুছ মিয়া, আর্মি মিলন, প্রবাসী মো. নবিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সালিশে চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান অভিযুক্ত হৃদয় হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার অপরাধ স্বীকার করে। এর শাস্তি হিসাবে হৃদয়কে ৫০ বার বেত্রাঘাত এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওই টাকার মধ্যে চেয়ারম্যান ৫ হাজার টাকা তাৎক্ষণিক ভিকটিমের পরিবারকে প্রদান করে।

তবে মির্জানগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনের কাছে প্রথমে এ ধরনের কোনও ঘটনা বলে জানান। পরে তিনি বলেন, আমি এ রকম অভিযোগ পাওয়ার পর ভিকটিম ও তার পরিবার এবং অভিযুক্তকে মুখোমুখি করি। কিন্তু এর কোনও সত্যতা পাইনি।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান আরও বলেন, তার কার্যালয়ে এ নিয়ে কোনও সালিশ বৈঠক ও জরিমান কিংবা শাস্তির ঘটনা ঘটেণনি, বিষয়টি ভিত্তিহীন।

পরশুরাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকত হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি জেনে এলাকায় পুলিশ পাঠিয়েছি, অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন