মানিকগঞ্জে এক ছাত্রকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে বরুণ্ডী তাজবিদুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে। আহত ছাত্র লাজিম মোল্লা (১২) মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সর্বনন্দপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী ইউনুস মোল্লার ছেলে।

 

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক বদরুল আলম জানান, ওই শিশু তার শরীরের জখম নিয়ে ৯ মার্চ সোমবার বিকেল ৩টার দিকে হাসপাতালে আসে। শারীরিক অবস্থা দেখে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে জানান তিনি।

আহত ওই ছাত্র জানায়, সে স্থানীয় বরুণ্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় পাস করে। ছোটবেলা থেকেই আরবি নিয়ে পড়ার শখ থাকায় সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি না হয়ে ৩ জানুয়ারি ভর্তি হয় বরুণ্ডী তাজবিদুল কোরআন হাফিজিয়া আবাসিক মাদ্রাসায়। সে ইতোমধ্যে আমপাড়া পড়া শেষ করেছে। রোববার তার কোরআন ধরার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার (৭ মার্চ) এশার নামাজের পর শিক্ষক মতিউর রহমান তাকে আমপাড়ার পড়া ধরেন। একটু ভুল হওয়ায় ওই শিক্ষক তাকে স্টিলের স্কেল দিয়ে পেটান। কান্না করলে মুখ চেপে ধরেন। চোখ দিয়ে পানি বের হওয়ায় আরও পেটান। ঘটনার রাত শেষে ফজরের নামাজের সিজদা দেওয়া অবস্থায় সে ওই মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাসায় ফিরে যায়।

আহত ছাত্রের মা লিপি আক্তার বলেন, তার ছেলে ছোটবেলা থেকেই আরবি শেখার ব্যাপারে আগ্রহী। সে এক বছর ধরে ইমামের অবর্তমানে নিজ গ্রামের মসজিদে আজান দেয় এবং নামাজ পড়ায়। মাদ্রাসায় ভর্তির আগ পর্যন্ত সে এই কাজটি করে। শিক্ষকের এই আচরণে তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি তার কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে জানান ওই ছাত্রের মা লিপি আক্তার।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্নিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সমকাল

মন্তব্য করুন