ঢাকার কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা উত্তর পাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোর চারটায় জামাত নেতা আবুল হোসেনের বাড়ির চারতলায় বিস্ফারণের ঘটনা ঘটে। এ সময় মুহূর্তের মধ্যে ঐ বাড়ির ছাদের একাধিক অংশ উড়ে যায় এবং ভেঙে পরে। আশপাশের প্রায় ২৫ টি বাড়ির জানালার গ্লাস ও আসবাবপত্র ভেঙে চুর মার হয়ে যায় এ ঘটনায়।
এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দেয়াল চাপায় পাঁচ বছরের এক শিশু সিজান (৬) এর মাথার এক অংশ ফেটে যায় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ঐ শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আহতদের মধ্যে মাইনুল হোসেন এবং আজম খান ও এক দম্পতিসহ চারজনকে ঢাকা মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্য আহতদের ইসলামি ব্যাংক হাসপাতাল ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি কারা হয়েছে।
এ ব্যাপার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ জামানের কাছে বোমা বিস্ফারণের ঘটনা জানতে চাইলে ওসি জানায়, এটি বোমা বিস্ফারণ নাকি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফারণ তা তদন্ত না করে কিছু বলা যাবে না। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তৃপক্ষ ঘটনা স্থল পরিদর্শনের পর বলা যাবে।
এদিকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খুঁজে দেখতে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঐ বাসার গ্যাস সিলিন্ডারটি এখনো অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। ২০১৯ সালের মে মাসে কেরানীগঞ্জের বন্দ ডাকপাড়া এলাকায় একটি ক্যামিকেল গোডাউন বিস্ফারণের পর যেভাবে সেখানে আশেপাশের ২৫-৩০ বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এখানেও একই রকম ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে যেভাবে আগুন লাগার কথা, সেটিও এখানে দেখা যায়নি।
এদিকে ঘটনার পরপর বাড়ির মালিক জামাত নেতা আবুল হোসেন পালিয়ে গেছেন। স্থানীয়রা জানায়, তার সঙ্গে আরো বেশ কয়েকজন পালিয়ে যান, যারা শিবির কর্মী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর থেকে পুলিশ নিরাপত্তার জন্য বাড়িটি পাহারায় রেখেছে।
এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করেন বিগত ছয়মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশ এই বাড়ি থেকে তিন শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে ঢাকার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা, পারগেন্ডারিয়া, মীরেরবাগ, হাসনাবাদ, ইকুরিয়া চুনকুটিয়া এলাকায় শিবির কর্মীদের শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে যার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের কোন অনুমোদন নেই। প্রায় দুই শতাধিক শিবির কর্মী এ সকল স্কুল পরিচালনার পাশাপাশি জামাত শিবিরের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।