চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন মীরপাড়া আবাসিক এলাকার মানিক কলোনিতে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কয়েকটি চাকমা পরিবারের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
চাকমা পরিবারগুলোর অভিযোগ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক নারী কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নির ছোট ভাই অভি তাদের ওপর নির্যাতন করেছেন। গত পনেরো দিনে তিন দফায় তাদের হুমকি-ধমকি ও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভুক্তভোগীদের একজন নিশান চাকমা বলেন, ‘সাবেক নারী কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নির ছোট ভাই অভি প্রায়ই আমাদের ওপর নির্যাতন করে। মীরপাড়া আবাসিক এলাকার মানিক কলোনিতে আমাদের চাকমা সম্প্রদায়ের পাঁচটি পরিবার পাঁচ কক্ষের একটি ঘরে বসবাস করে। গত ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভি আট-দশ জন যুবকসহ এসে ওই ঘরে ঢুকে পড়ে। এরপর মদ বিক্রি করার অভিযোগ এনে ওইসব ঘরে থাকা নারীদের অশ্লীল কথাবার্তা বলে। একপর্যায়ে নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যায়। ওই কলোনির মুখে জাহান ম্যানসনের চতুর্থ তলায় রাংকেল চাকমা নামে একজন পরিবার নিয়ে থাকেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) ওই বাসায়ও তারা হামলা চালায়। ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে কয়েকজনকে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে মদ বিক্রির অভিযোগ এনে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে ওই বাসায় থাকা রাংকেল চাকমার স্ত্রী পূর্ণা চাকমার কাছ থেকে গলার হার, নগদ চার হাজার টাকা এবং বিকাশে আরও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় আজ (শুক্রবার) বিকাল ৪টার দিকে আমরা অভিযোগ করতে সাবেক কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নির বাসায় যাই। সেখানে যাওয়ার পর তার ভাই অভি আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা যাওয়ার পর অভি খবর দিয়ে আরও ২০-২৫ ছেলেকে নিয়ে আসে। তারা আমাদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে অভিযোগ করতে আমরা এখন থানায় এসেছি।’
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বলেন, ‘সন্ধ্যায় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চাকমা পরিবারগুলোকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে তারা থানায় অপেক্ষা করছেন। কী বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
ওসি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা জানতে পেরেছি, সাবেক কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নির বাসায় বিকালে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সেখানে উভয় পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়েছে। চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন নিচ থেকে ইট-পাথর ছুড়ে মেরেছেন, আর অভি ও তার সহযোগীরাও বাসার ছাদ থেকে তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়েছেন।’