২৭ জুলাই ২০১৯ ভুক্তভোগী ৩ শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ভুঁইগড় দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসা থেকে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মুফতী মোস্তফিজুর রহমান (২৯)কে গ্রেফতার করা হয়। সে নেত্রকোনা লক্ষ্মীগঞ্জ কাওয়ালী কোণা গ্রামের মো.ওয়াজেদ আলীর ছেলে। সে অত্র মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ‘আখিরাতের ভয়, মিথ্যা হাদিস ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে’ ৩ বছর যাবৎ ১১ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনা স্বীকার করেছে অধ্যক্ষ মুফতী মোস্তফিজ।
রবিবার (২৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২ টায় র্যাব-১১ এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ছবিঃ ঢাকা ট্রিবিউন
সংবাদ সম্মেলনে আলেপ উদ্দীন জানান, গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত মুফতী মোস্তাফিজুর রহমান তিনবছর ধরে নানা ভয়ভীতি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আপন দুইবোনসহ ১১ জন ছাত্রীকে মাদ্রাসায় তার কক্ষে নিয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করে আসছিলো।
কখনো আখিরাতের ভয়, হুজুরের কথা শোনা ফরজ, না শুনলে গোনাহ হবে, জাহান্নামে যাবার ভয় দেখাতো। আবার কখনও তাবিজ করে পাগল করার এবং পরিবারের ক্ষতি করার ভয়ভীতি দেখিয়ে সে বিভিন্ন বয়সী মাদ্রাসার ছাত্রীদেরকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি করতো। এমনকি ওই মাদ্রাসা অধ্যয়নরত আপন দুইবোন ও মোস্তফিজুরের নিকটাত্মীয়ের আটবছর বয়সী একশিশু যে তার মাদ্রাসায় পড়তো তাকেও একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, “মোস্তফিজুর নিজেই বিভিন্ন জাল হাদিস তৈরী করে হুজুরের সাথে সর্ম্পক করা জায়েজ আছে বলে ছাত্রীদের বলত। একটি জাল হাদিসের মাধ্যমে অভিভাবক ও সাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয় বলে একাধিক ছাত্রীকে কৌশলে ধর্ষণ করার পর আরেকটি জাল হাদিসের মাধ্যমে তালাক হয়ে যাওয়ার ফতোয়া দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে বের করে দিত।”