ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী (১২)।
ঘটনাটি জানাজানি হলে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল করিমকে (৫৫) আটক করেছে পুলিশ। এনিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, কিছুদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে স্কুলে অনিয়মিত হয়ে পড়ে ওই ছাত্রী। গ্রামের স্থানীয় ডাক্তারের চিকিৎসায় উন্নতি না হওয়ায় সোমবার(১ এপ্রিল) ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অন্তঃসত্ত্বার আলামত দেখে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরামর্শ দেন। পরে পার্শ্ববর্তী একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আল্ট্রাসনোগ্রামে মেয়েটির অন্তঃসত্ত্বা বলে নিশ্চিত হয়।
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথম পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়ার পরও বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় ওই মেয়েটিকে খবর দিয়ে এনে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করা হয়।
পরবর্তীতে বাড়ি ফিরে স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয় মেয়েটি। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল করিমকে আটক করে পুলিশ। তিনি একই এলাকার মৃত হাজী আলতাফ আলীর ছেলে। মেয়েটি চার বোনের মধ্যে সবার ছোট। প্রায় ১০ বছর আগে তার বাবা মারা যান।
এ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি প্রভাবশালী মহল শুক্রবার দিনভর বিভিন্ন চেষ্টা-তদবীর করেন। তবে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলে তিনি মামলা রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বিষয়টি অধিকতর তদন্তে সহকারী পুলিশ সুপার সাইকুল আহমেদ ভূঁইয়াকে দায়িত্ব দেন।
সহকারী পুলিশ সুপার সাইকুল আহমেদ ভূঁইয়া জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান শিক্ষক ঘটনাটি স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় তাকে আসামি করে মেয়েটির মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, স্পর্শকাতর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশের কিছুটা সময় লেগেছে। শনিবার (৬ এপ্রিল) সদর হাসপাতালে আবারো মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে।