গাজীপুরের শ্রীপুরে শরীফ মাহমুদ ফারুকী নামে এক মসজিদের খতিবের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। দগ্ধ খুশি বেগম (২১) বর্তমানে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
তিনি গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার বদলাগাড়ী এলাকার হাসান শেখের মেয়ে। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় ভুক্তভোগীর বাবা হাসান শেখ একটি অভিযোগ করেন।
অভিযোগের বিবরণ ও বাদী হাসান শেখের ভাষ্যমতে, দুই বছর আগে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের শরীফ মাহমুদ ফারুকীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবি করতেন ফারুকী। দাবি অনুযায়ী বিভিন্ন সময় নগদ দুই লাখ টাকা ও এক লাখ ২০ হাজার টাকার আসবাবপত্র দেওয়া হয়। এক বছর আগে ফারুকী শ্রীপুর উপজেলার বহেরারচালা ইয়াকুব আলী জামে মসজিদে খতিবের দায়িত্ব নেন। সেই সুবাদে ছয় মাস আগে থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বহেরারচালা আনসার রোড এলাকার রেজাউল করিমের বাসায় ভাড়া ওঠেন। সম্প্রতি অভিযুক্ত শরীফ মাহমুদ এক নারী প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
হাসান শেখ জানান, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুশি বেগমের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শরীফ মাহমুদ। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারধর করে ঘরের মেঝেতে ফেলে রাখেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্স বাজানো শুরু করেন শরীফ। এ সময় খুশি বেগমের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাথরুমে গিয়ে দরজা আটকে দেন। পরে দগ্ধ অবস্থায় খুশি বেগম ঘরের দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে চিৎকার ও কান্নাকাটি শুরু করেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে তার গায়ের আগুন নিভিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। ঘটনার পর রংপুর থেকে শ্রীপুর এসে এলাকাবাসীর সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করেন হাসান শেখ। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর শরীফকে সঙ্গে নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে দগ্ধ খুশি বেগমকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শরীফ পালিয়ে যান। পরে বুধবার শ্রীপুর থানায় সশরীরে উপস্থিত থেকে একটি অভিযোগ করেন হাসান শেখ।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. এম এ হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুশি বেগমের শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। চিকিৎসা চলছে, সুস্থ হতে সময় লাগবে।’
শ্রীপুর থানার ওসি ইমাম হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়া গেছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’