চট্টগ্রাম মহানগরীতে আবারো দিনদুপুরে সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে এক ছাত্রলীগ নেতা ও এক যুবলীগ কর্মীকে গুলি করে নির্বিঘ্নে চলে গেছে। গতকাল শুক্রবার সোয়া ৩টার দিকে নগরীর সিডিএ এভিনিউর নাছিরাবাদ সিএন্ডবি কলোনিতে এই ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহতরা হলো⎯ওমর গনি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ও স্নাতক ১ম বর্ষের ছাত্র মানস কান্তি চৌধুরী (২১) এবং যুবলীগ কর্মী গোপাল দাস (২৮)। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। ছাত্রলীগ এ ঘটনার জন্য ছাত্র শিবির ও ছাত্রদলের ক্যাডারদের দায়ী করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, নাছিরাবাদ সিএন্ডবি কলোনির ভেতরে একটি দোকানের সামনে বসা ছিল মানস। আনুমানিক বেলা সোয়া তিনটার দিকে দুটি ট্যাক্সিতে করে ৬জন যুবক কলোনির গেটে আসে। ৪ যুবক নেমে এসে ছাত্রলীগ নেতা আলমকে খোঁজে। তারা মানসের কাছে আলম কোথায় জানতে চায়। এভাবে কিছুক্ষণ তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের একজন একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে মানসকে গুলি করে। তার পশ্চাদদেশে ও হাতে ৩টি গুলি লাগলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে যুবলীগ কর্মী ও দোকানদার গোপাল দাস দোকান থেকে বের হয়ে পালাতে চাইলে সন্ত্রাসীরা তাকেও পায়ে গুলি করে । এর পরপরই সন্ত্রাসীরা অপেক্ষমান ট্যাক্সিতে করে চলে যায়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ৪ সন্ত্রাসী সিএন্ডবি কলোনির ভেতর দিয়ে হেঁটে পেছন দিয়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অথবা তুলাতলীর দিকে চলে যায়। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে সিডিএ এভিনিউতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং কমপক্ষে ৫টি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যার পরও ছাত্রলীগ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পুলিশ এখন পর্যন্ত খোকন নামে ছাত্রদলের এক ক্যাডারের পরিচয় জানতে পেরেছে এবং সে হামলাকারীদের সঙ্গে ছিল। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রেই এ তথ্য জানা গেছে। পুলিশ ঘটনার পরপরই এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে, কিন্তু কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে রাতেও পুলিশ পলিটেকনিক, নাছিরাবাদ ও শেরশাহ কলোনিসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। ঘটনাটি সম্ভবত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছাত্রদল ও শিবিরের জুনিয়র ক্যাডার গ্রুপই এই হামলা চালিয়েছে বলে সূত্রগুলো দাবি করেছে।
ভোরের কাগজ, ১ ডিসেম্বর ২০০১