উল্লাপাড়া উপজেলার পৌর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কায় শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গত ৮ অক্টোবর রাতে উপজেলার পূর্বদেলুয়া গ্রামে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা, মারপিট এবং এক যুবতীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও হামলা বন্ধের দাবিতে শুক্রবার বিকালে উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। একই স্থানে একই সময়ে বিএনপিও সভা আহবান করায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। উপজেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটার আশঙ্কায় উল্লাপাড়া সমগ্র পৌর এলাকায় দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। এদিকে পূর্বদেলুয়া গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের মধ্যে এখনও আতঙ্কাবস্থা বিরাজ করছে। ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পূর্বদেলুয়ার অনিল শীলের যুবতী কন্যা ভোট কেন্দ্র আওয়ামী লীগের এজেন্ট হওয়া এবং আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার অপরাধে বিএনপির কতিপয় সন্ত্রাসী অনিল শীলের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও মারপিট করে। হামলাকারীরা এক যুবতী মেয়েকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় পূর্বদেলুয়া গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে অনেক সংখ্যালঘু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরের দিন ধর্ষিতাকে ফিরিয়ে দেয়া হয় নিজের বাড়িতে। এ ঘটনায় উল্লাপাড়া থানায় শিশু ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করা হয়। মামলায় ১৬ জনকে আসামী করা হয়। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার উল্লাপাড়া শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগ প্রতিবাদসভা আহবান করে। কিন্তু প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারার কারণে প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের নরিনা, গাড়াদহ, পোতাজিয়া, উল্লাপাড়ার রামকৃষ্ণপুর, লাহিড়ী মোহনপুর, রায়গঞ্জ উপজেলার লাঙ্গলমোড়া, মোরদিয়া, পাইকড়া, সরাইদহ, চান্দাইকোনা, তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ বাজার, বিনোদপুর, বস্তল, গুড়পিপুল, সিরাজগঞ্জ সদরের শিয়ালকোলসহ বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলা, ভাংচুর, মারপিট অব্যাহত রয়েছে। এদের অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে পালিয়ে জীবন রক্ষা করছে।
দৈনিক জনকন্ঠ, ১৩ অক্টোবর ২০০১