নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ার চর ঈশ্বরের প্রায় ২০ সহস্রাধিক জেলে সম্প্রদায় ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত লোকজন সন্ত্রাসী মোস্তফা মেম্বর বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, সন্ত্রাসী মোস্তফা মেম্বর ̄স্থানীয় কিছু যুবককে একত্রিত করে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অন্যের জায়গাজমি দখল করা ও সংখ্যালঘুদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসী মোস্তফাসহ ৭/৮ জনের একটি সন্ত্রাসী দল জেলেপাড়ার বিভিন্ন হাটবাজারে মদ, গাঁজা ও ফেনসিডিল পাইকারিভাবে বিক্রি করে চলেছে। এছাড়া তারা গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন জায়গার আনাচে-কানাচে তাস ও জুয়ার আসর বসিয়ে যুব সমাজকে বিপথগামী করছে। এসব সন্ত্রাসী, বিশেষ করে মোস্তফা বাহিনীর প্রধান মোস্তফা মেম্বরের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মোস্তফা মেম্বরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী জেলেপাড়ায় হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘু নিরঞ্জন জলদাসের বাড়ি লুটপাট করে এবং তার কাছ থেকে ১শ’ ৫০ টাকা দামের একটি শাদা স্ট্যাম্পে জোর করে সই আদায় করে নেয়। পরে সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার সময় নিরঞ্জনের নগদ টাকা ও ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্রসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিরঞ্জন বাদি হয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মোস্তফা মেম্বরকে গ্রেফতার করে। মোস্তফা মেম্বরকে থানাহাজতে রাখা অবস্থায় তার সমর্থক বিএনপি সন্ত্রাসীরা হাতিয়া থানা ঘেরাও করে রাখে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত উচ্ছৃঙ্খল ওই সন্ত্রাসীরা থানার অভ্যন্তরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে মোস্তফা মেম্বরকে থানা হাজত থেকে কোর্টে নেয়ার পথে বিএনপির কয়েকশ’ নেতা-কর্মী তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশ হামলাকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে ৫ জন আহত হয়। পরে সন্ত্রাসী মোস্তফা মেম্বার আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে এসে মামলার বাদি নিরঞ্জনকে মামলা উঠিয়ে নেয়াসহ তার প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে সংখ্যালঘু নিরঞ্জন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। নিরঞ্জন জানান, মোস্তফা মেম্বরের লোকজন মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছে। না হলে আমাকে জেলে পাড়ায় থাকতে দেবে না বলেও হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে অসহায় নিরঞ্জন প্রধানমন্ত্রী ও সরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংবাদ, ৭ মার্চ ২০০২