নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দলে’র শীর্ষ দুই নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে অ্যান্টি-টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর ২০১৯) ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এই তিনজন হলো আব্দুল্লাহ আল হাসনাত ওরফে কল্লোল (৩৯), আমিনুল ইসলাম ওরফে সেতু (৩০) এবং ফজলে করিম ওরফে সোহাগ (৩২)।
এটিইউয়ের পুলিশ সুপার (ইন্টেলিজেন্স) এম হাসানুল জাহীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, হাসনাত খুলনা ও বরিশাল বিভাগের (যৌথ) প্রধান এবং আমিনুল খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার নির্বাহী নায়েক হিসেবে কাজ করতো। আর ফজলে করিম খুলনা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন নথিপত্র ও বই উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোরনীগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এটিইউ সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এটিইউয়ের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট জানতে পারে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘আল্লাহর দলে’র কয়েকজন সদস্য খুলনা থেকে ঢাকায় এসে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার পরিকল্পনা করেছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে কেরানীগঞ্জের বেগুনবাড়ি জামে মসজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাসনাত, আমিনুল ও ফজলে করিমকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ধর্মীয় উদ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতা করার উদ্দেশ্যে একসঙ্গে মিলিত হয়েছিল বলে স্বীকার করেছে।
এটিইউ-এর কর্মকর্তারা জানান, হাসনাতের বাবার নাম আব্দুল মান্নান খান। খুলনার খালিশপুরের মুজগুন্নী দক্ষিণ কাশিপুরে তার বাড়ি। সে ২০০৩ সাল থেকে ‘আল্লাহর দলে’র সঙ্গে যুক্ত। সংগঠনটির আমীর মতিন মেহেদীর একান্ত সহযোগী ছিল সে। এছাড়া ২০০৪ সালে খুলনা জেলার নায়েক, ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের প্রধান, ২০০৭ সালে পাবনা-সিরাজগঞ্জ-নাটোর জেলার দায়িত্বশীল, ২০১০ সালে রাজশাহী জেলার আঞ্চলিক প্রধান, ২০১১ সালে রংপুর বিভাগের প্রধান এবং ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত খুলনা বিভাগের নিয়ন্ত্রক পদে কাজ করতো।
এটিইউ সূত্র আরও জানায়, আমিনুলের বাবার নাম মৃত আব্দুস সালাম। তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর চড় বাঘুটিয়ায়। সেও ২০০৩ সালে ‘আল্লাহর দলে’ যোগ দেয়। ২০০৫-০৬ সালে ঢাকা জেলার, ২০০৭ সালে পাবনা ও মানিকগঞ্জ জেলার, ২০০৮-০৯ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার, ২০১০-১১ সালে চাঁদপুর জেলার, ২০১২-১৩ সালে দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার, ২০১৪-১৫ সালে চট্টগ্রাম জেলার, ২০১৬ সালে গাইবান্ধা জেলার, ২০১৭ সালে বরিশাল ও ঢাকা জেলার নির্বাহী নায়েক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সে। আর ফজলে করিম ২০০৪ সাল থেকে গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত খুলনা জেলায় সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে আসছিল।
পুলিশ কর্মকর্তা হাসানুল জাহীদ বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে তাদের সহযোগীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তারা কীভাবে সংগঠিত হচ্ছিল এবং নাশকতার কী কী পরিকল্পনা করেছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।’

বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন