কক্সবাজারের সদর উপজেলার এক কিশোরীকে দেড় মাস আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ধর্ষক ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। পরে তাদেরকে কক্সবাজার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।

 

গ্রেপ্তারকৃতরা হল- সদর উপজেলার খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ার শাহাব উদ্দীন, সহযোগী পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়ার আরমান হোসেন, খরস্কুল হাটখোলাপাড়ার নুরুল আলম এবং পেঁচারঘোনার লোকমান।

কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুনিরুল গিয়াস জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলায় এক কিশোরী কন্যাকে দেড় মাস যাবৎ আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করছে, এমন অভিযোগ করে গত ১১ অক্টোবর ৯৯৯ ফোন করে সহায়তা চান কিশোরীর মা। তিনি দাবি করেন, তার স্বামী ৩৫ হাজার টাকা ধার নেওয়ার পর যথাসময়ে ফেরৎ দিতে না পারার কারণে টাকার পরিবর্তে তার মেয়েকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হচ্ছে। খবর পেয়ে কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে মাঠে নামে র‌্যাব।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা জানান, তার স্বামীর সাথে খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ার আব্দুল গনির ছেলে শাহাবুদ্দিনের সুসম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে শাহাবুদ্দিন তাদের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো। এরইমধ্যে তাদের টাকার প্রয়োজন হলে শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ধার নেয় তার স্বামী। কিন্তু টানাপোড়ণের সংসারের সেই ৩৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারেনি তিনি।

এই সুযোগে শাহাবুদ্দিন লোকজন নিয়ে তাদের কিশোরী কন্যাকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং টাকা ফেরত না দিলে তাদের মেয়েকেও আর ফেরত দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবদুর রশীদের সাথেও বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও কোনো ফল হয়নি। পরে তিনি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহায়তা চান।

ওসি মুনিরুল গিয়াস জানান, গত ১১ অক্টোবর কক্সবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনসুরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযুক্ত শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালায়। কিন্তু অভিযানের খবর আগে থেকে জেনে যাওয়ায় শাহাবুদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন ওই কিশোরীকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

খরুলিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (মেম্বার) আব্দুর রশিদ জানান, টমটম চালক শাহাবুদ্দিন ইতোপূর্বেও নারী সংক্রান্ত এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

ওসি বলেন, “আজ (শুক্রবার) সকালে আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করার পর তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।”

ঢাকা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন