সমাবেশ করে বাল্য বিয়ে ও জিহাদে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ব্যানার, উগ্র মৌলবাদের প্রচারপত্র ও জিহাদি বইপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২২ আগস্ট) বিকালে উপজেলা সদরের ডাক বাংলোর সামনে সমাবেশ করার সময় তাদের আটক করা হয়। রাতে মিঠামইন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন। সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকালে ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক ওই ১৭ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেফতার ১৭ জন হলেন- নিকলীর মো. আনিছুর রহমান (৪৩), মো. মুজিবুর রহমান (৫০), আজহারুল ইসলাম (২৩), মো. ইসলাম উদ্দিন (৪১), মো. রইছ উদ্দিন (৬০), মো. হারুন অর রশিদ (৩৫), মো. আব্দুর রশিদ (৪০), মো. সাইদুর রহমান (৫২), আব্দুস সাত্তার (৫২), মো. আব্দুল হাসিম (৫২), মো. আশরাফ আলী (৬১), মো. মজিবুর রহমান (৫২); কটিয়াদীর মিজানুর রহমান খান (৫৫); অষ্টগ্রামের মহিউদ্দিন (৩২); কিশোরগঞ্জ সদরের ওমর ফারুক (২৬) ও জামাল উদ্দিন (৪০) এবং নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার ইমরান হোসাইন (২৯)।
পুলিশ বলছে, তারা উগ্রবাদী বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য হতে পারে। রবিবার বিকালে সমাবেশ করে কোরআন ও হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তারা লোকজনকে বলছিলেন, ‘পবিত্র কোরআনে ছেলে ও মেয়ের বিয়ের কোনও বয়স নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। বিয়ের বিষয়ে বয়সের কোনও শর্ত বর্ণনা করা হয়নি। কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকার ১৮ বছরের নিচে কোনও মেয়ের বিয়েকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে আইন করেছে। ছেলেদের বেলায়ও ২১ বছরের নিচের কাউকে বিয়ে দিলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, যা ইসলাম সম্মত নয়। এসব ইসলামবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’
মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির রব্বানি জানান, তাদের প্রচারপত্রে বাল্য বিয়েসহ উগ্রবাদ, জিহাদি কর্মকাণ্ডে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়াদি ছিল, যা আইনত অপরাধ। গ্রেফতার ১৭ জন বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত হয়ে হাওর উপজেলা মিঠামইনে গিয়েছিল সমাবেশ করতে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ‘গ্রেফতার ১৭ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশ পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। তাছাড়া তারা নিষিদ্ধ কোনও সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’