নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির নারী শাখার দায়িত্বে থাকা এক ভারতীয় তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তার নাম আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুল তাসনিম ওরফে প্রজ্ঞা দেবনাথ।

 

সে কেরানীগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতার আড়ালে অনলাইনে নারীদের জঙ্গি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতেন ও দলে ভেড়াতেন।

সিটিটিসি’র উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান,  ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর ১৭ জুলাই শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। জঙ্গি তৎপরতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে চারদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার আশা করছে সিটিটিসি।

সিটিটিসি সূত্র জানায়, সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বী এই তরুণীর বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ধনিয়াখালি থানার পশ্চিম কেশবপুর গ্রামে। ২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এর আগেই তিনি ধর্মীয় বিষয়ে পড়াশোনায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নব্য জেএমবির নারী শাখার সদস্যদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। অনলাইনে জেএমবির কর্মকাণ্ডে আকৃষ্ট হয়ে তিনি ধর্মান্তরিত হন। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট, বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধন সনদ, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ও দুটি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে।

সিটিটিসি’র এক কর্মকর্তা জানান, আয়েশা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে আসছিলেন। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল এলাকা থেকে জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমাকে সিটিটিসি গ্রেফতার করে। তখন তিনি নব্য জেএমবি’র নারী শাখার দায়িত্ব নেন। তিনি আত্মগোপনে থেকে অনলাইনে নারী ও পুরুষ সদস্যদের রিক্রুটের কাজ করছিলেন। তার কাছে দেশ-বিদেশ থেকে নব্য জেএমবি’র ফান্ডে টাকা আসত। ওই সব টাকা তিনি নারী সদস্যদের মোটিভেশন এবং রিক্রুটমেন্টের কাজে ব্যয় করতেন। তিনি এ পর্যন্ত কতজনকে রিক্রুট করেছেন এবং কোন কোন উৎস থেকে সংগঠন পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন তা জানার চেষ্টা চলছে।

সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানান, ২০১৬ সাল থেকে আয়েশা ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে যাতায়াত করতেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি কেরানীগঞ্জ থেকে একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেন। ওই সনদ দিয়ে তিনি একটি ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরি করেন। প্রবাসী এক বাংলাদেশি নাগরিককে অনলাইনে বিয়ে করে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য ভুয়া কাগজপত্রও তৈরি করেছিলেন। তার সঙ্গে অনলাইনে আরও কিছু নারী জঙ্গির যোগাযোগ রয়েছে। তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তার বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে।

সমকাল

মন্তব্য করুন