গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে সাত বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কারও কাছে বিচার চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে গুম করার হুমকি দেয় বলে জানান ওই নারী। তবে বিচারের আশায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও বিচার পাননি তিনি।

অভিযোগে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর আগে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় চল্লিশোর্ধ্ব ওই নারীর। তিনি দুই সন্তানের জননী। এরপর বাবার বাড়ি থেকে একটি এনজিওতে কাজ করতেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জ বাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী নয়ন মিয়ার (৪৫) সঙ্গে। পরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে গভীর প্রেমের সম্পর্ক।

প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে একাধিক স্থানে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে নয়ন। রুমানা (ছদ্মনাম) নয়নকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে স্থানীয় এক কাজীকে দিয়ে বিয়ের নাটক সাজিয়ে তাকে যৌন নির্যাতন করা হয়। রুমানা বিয়ের প্রমাণ (কাবিননামা) দেখতে চাইলে শুরু হয় নয়নের নানা তালবাহানা। এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও নির্যাতিতা ওই নারী বিচার পাননি।

অবশেষে নয়ন ও কাজীকে অভিযুক্ত করে ভুক্তভোগী ওই নারী কালীগঞ্জ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করেন।

অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি অপারেশন কায়সার আহম্মেদ। অভিযুক্ত নয়ন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজিরচর গ্রামের আমান উল্লাহ ছেলে। বর্তমানে তিনি কালীগঞ্জ পৌরসভায় মুন্সুরপুর এলাকায় স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।

নির্যাতিতা ওই নারী জানান, বিয়ের ব্যাপারে চাপ দিলে বিভিন্ন দরবার শরীফ গিয়ে কসম কেটে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন নয়ন। এভাবে দীর্ঘ সাত বছর ধরে তাদের প্রেম ও যৌন সম্পর্ক চলতে থাকে। এর মধ্যে ওই ভিকটিম বিয়ের রেজিস্ট্রিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র করার কথা বললে বিয়ের নাটক সাজান নয়ন।

তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে থানা পুলিশের ভয় দেখালে নয়ন তাকে বিয়ে করার কথা অস্বীকার করে। বরং নয়ন তাকে বলে তোকে ফুঁ দিয়ে বিয়ে করেছি ফুঁ দিয়ে আবার তালাক দিয়েছি। পারলে তুই আমার কিছু করিস। আর এ ব্যাপারে তুই যদি কারও কাছে যাস, তাহলে তোকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলব।

এদিকে ওই কাজীর কাছে গেলে কাজীও কোনো কাগজপত্র হয়নি বলে ওই নারীকে জানান। কাজী আবু তাহের বলেন, ওই দিন আমার বাড়িতে তারা এসেছিলেন। তবে বিয়ের ব্যাপারে কোনো কাগজপত্র বা বিয়ে পড়ানো হয়নি।

অভিযুক্ত নয়ন মিয়া জানান, ওই নারীর সঙ্গে নয়নের প্রেম বা বিয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তবে বিভিন্ন সময় তার বাড়িতে গিয়ে বাজার সদাই ও ওষুধসহ বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করতেন তিনি।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আনিসুর রহমান জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যুগান্তর

মন্তব্য করুন