চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি হিন্দু পরিবারকে ইসলাম না মানলে দেশ ছাড়তে হুমকি দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে পৌরসদরের ৪নম্বর ওয়ার্ডের প্রেমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ১৪ এপ্রিল বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়।
পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইসহ বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে একই এলাকায় আমন আরো দুই ভাড়াটিয়া হিন্দু পরিবারকে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড পৌরসদরের ৪নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত প্রেমতলা এলাকার বাসিন্দা ও চন্দ্রনাথ ধাম মহাতীর্থের লোকনাথ মন্দির পরিচালনা কমিটির অর্থ সম্পাদক মৃদুল অধিকারীর ঘরের দরজার ফাঁকে মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময় আরবি ও বাংলায় লেখা একটি চিরকুট রেখে যায় অজ্ঞাতরা। বুধবার সকালে তিনি ঘরের দরজা খোলার সময় তিনি এ চিঠিটি দেখতে পান। পরে তিনি স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর হারাধন চৌধুরী বাবুকে ঘটনাটি জানিয়ে চিঠিটি দিয়ে আসেন।
একই সময়ে আরো দুটি হিন্দু ভাড়াটিয়া পরিবারও এরকম চিঠি পাওয়ার কথা জানান কাউন্সিলরকে। এরপর কাউন্সিলর হারাধন চৌধুরী বাবু তার ফেসবুক পেজে চিরকুটটির ছবিসহ পোস্ট করে লেখেন, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’ তাহলে এসব কেন হচ্ছে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মৃদুল অধিকারী বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি আরবি ও বাংলায় লেখা চিঠিটি পান। তাতে তাকে ইসলাম গ্রহণ করতে অথবা দেশ ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করতে অসৎ উদ্দেশে কোনো চক্র এমন কাজ করেছে বলে তিনি মনে করেন।
পৌর কাউন্সিলর হারাধন চৌধুরী বাবু বলেন, এ এলাকাটিতে সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে শত শত বছর ধরে হিন্দু- মুসলিম পাশাপাশি বসবাস করে আসছে। হঠাৎ কি হলো, কার মাথায় এমন সাম্প্রদায়িকতার জন্ম হলো বুঝতে পারছি না।
তিনি বলেন, শুধু মৃদুল অধিকারীর পরিবার নয়, সেখানে আরো দুটি ভাড়াটিয়া পরিবারও এমন চিঠি পাওয়ার কথা প্রতিবেশীদের জানিয়েছিলো। পরে প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হওয়ায় ঝামেলা এড়াতে ভাড়াটিয়া পরিবারগুলো এখন আর এসব ব্যাপারে কথা বলতে চাইছে না।
সীতাকুণ্ড থানার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনার কথা শুনে আমরা দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মৃদুল অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। এ ছাড়া অন্য দুটি পরিবারকে চিঠি দেওয়ার প্রমাণ আমরা পাইনি। এমনিতে এলাকায় শোনা যাচ্ছে বলে লোকজন বলাবলি করছে।