চাকরি প্রত্যাশী এক তরুনীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যরা সভা করেন। সিন্ডিকেট সভায় মনিরুল ইসলামকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রত্যাশী এক তরুণীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওই তরুণীকে ফেসবুকে যৌন আবেদনময়ী অঙ্গভঙ্গি করেন রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম। এমনকি ওই তরুণীকে চাকরি পাইয়ে দেয়ার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন সময় রেজিস্ট্রার তার নগরীর রূপাতলী হাউজিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা বাসায় ডাকতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও প্রমাণসহ রেজিস্ট্রার মনিরুলের বিচারের দাবিতে ভিসির কাছে লিখত আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভিসি সিন্ডিকেটের তিন সদস্যের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভা রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে নৈতিক স্খলনের দায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন।
গত ১৬ জানুয়ারি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেয়া হয় অভিযুক্ত রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে। সেখানে মনিরুল ইসলামকে নৈতিক স্খলনের দায়ে পদত্যাগ করতে বলা হয়। তা না হলে বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যান রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম।
অভিযুক্ত রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। বিষয়টি তিনি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক বলেন, নৈতিক স্খলনের দায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটি মো. মনিরুল ইসলামকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এ কারণে মঙ্গলবার রাতে ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যরা মনিরুল ইসলামকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নেন।