জামালপুর শহরের গোলাপবাগ এলাকায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে প্রতিবেশী এক কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। এর আগে শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ওই শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান।
বর্তমানে ভুক্তভোগী শিশুটি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় জামালপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত রাব্বী হাসান জয় স্থানীয় লাইট হাউজ স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বয়স কম হওয়ায় মামলা দায়েরের পর তাকে সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসারের মাধ্যমে তার মায়ের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শিশুটিকে বোনের বাসায় রেখে আসেন তার বাবা। শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে ওই বাসাতেই শিশুটিকে একা পেয়ে যৌন নির্যাতন করে কিশোর জয়। এ সময় শিশুটি চিৎকার দিয়ে উঠলে পালিয়ে যায় সে।
২৬ সেপ্টেম্ব শনিবার এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাব্বী হাসান জয়কে বিবাদী করে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে অভিযুক্ত জয়ের বয়স ১২ বছর হওয়ায় আইনি জটিলতা এড়াতে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র্যাব জামালপুর ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানা, জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান, সদর থানার শিশু বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জোসনা বেগম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলে মাসুদ, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার আব্দুস সালাম, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম, উন্নয়ন সংঘের শিশু সুরক্ষা প্রকল্পের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মিনারা পারভীনসহ মামলাটির বাদী-বিবাদী পক্ষের উপস্থিতিতে সদর থানায় এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে শিশু জয় তার অপরাধের দায় স্বীকার করে। ওই বৈঠকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসারের মাধ্যমে নিপীড়নকারী শিশু জয়কে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়াসহ আরও কিছু আইনি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান বলেন, “শিশুটিকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় স্কুলছাত্র রাব্বী হাসান জয়কে বিবাদী করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তবে জয়ের বয়স ১২ বছরের কম হওয়ায় আইন অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তারের নিয়ম না থাকায় জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার মো. আব্দুস সালামের মাধ্যমে তাকে তার মায়ের জিম্মায় রাখা হয়েছে।”