ঢাকার ধামরাইয়ে এক নারী শ্রমিককে বাসের মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বাস চালক সোহেলকে আটক ও বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ।
লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহত মমতা আক্তার (১৯) উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের শাহজাহান খাঁর মেয়ে ও ডাউটিয়া প্রতীক সিরামিক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
আটক বাসচালক ফিরোজ ওরফে সোহেল (৩০) রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার খালকোলা গ্রামের আমানত খানের ছেলে। সে বালিয়া ইউনিয়নের জেঠাইল গ্রামের জাকির হোসেনের মেয়ের জামাই। তিনি শ্বশুরবাড়িতে থেকে প্রতীক সিরামিক কারখানার শ্রমিকদের ভাড়া করা বাস চালাতেন। ঘটনার সময় বাসে কোনো সহযোগী ছিল না।
নিহত নারীর স্বজন ও পুলিশের কাছ থেকে জানা গেছে, ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাশে ডাউটিয়া এলাকায় প্রতীক সিরামিক কারখানায় প্রায় সাত মাস ধরে শ্রমিকের কাজ করে আসছিলেন মমতা আক্তার। প্রতিদিনের ন্যায় ১০ জানুয়ারি শুক্রবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার মা জুলেখা বেগম কারখানার শ্রমিকদের ভাড়া করা বাসে কালামপুর-মির্জাপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কাঠালিয়া এলাকা থেকে বাসে তুলে দেন মমতাকে। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি মমতা। বাড়ি না আসায় সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে পায়নি স্বজনরা। পরে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে মমতার বাবা শাহাজাহান খাঁ (জিডি নং ৪০৯)।
এদিকে স্বজনরা রাত সাড়ে এগারটার দিকে মমতার মৃতদেহ দেখতে পান একই সড়কের পাশে হিজলীখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিমে পরিত্যক্ত ভিটার জঙ্গলের মধ্যে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ওই রাতেই বাসচালক সোহেলকে তার শ্বশুড়বাড়ির জেঠাইল থেকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৭)।
আটক সোহেল পুলিশকে জানিয়েছে, মমতা বাসে উঠার পর থেকেই চালক সোহেলের মাথায় কু-মতলব উঠে। বাসে ওই সময় মমতা একাই ছিল। পরে বাস থামিয়ে বাসের লাইট বন্ধ করে মমতাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে সে। মমতা প্রাণপণে বাঁচার আকুতিও করে। এক পর্যায়ে সোহেলের হাতের বৃদ্ধ আ্ঙ্গুল কামড় দিয়ে মাংস ছিড়ে নেয় মমতা। এর পরও মমতা রেহাই পায়নি নরপিশাচ সোহেলের কাছ থেকে। এরপর চিৎকার দিয়ে বাস থেকে বের হয়ে যায় মমতা। ওই সময় তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সোহেল। পরে তার লাশ টেনে নিয়ে সড়কের পাশের একটি পরিত্যক্ত ভিটার জঙ্গলে রেখে দেয়।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, হত্যার আগে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা আপাতত বলা যাবে না। তবে যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে আলামত পাওয়া গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে গ্রেপ্তারের পর শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে চালক সোহেলকে।