ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের খানসামায় ধীমান ঘোষ নামের এক ব্যক্তির ওপর হামলা হয়েছে। তিনি উপজেলায় আঙ্গারপাড়া ইউ‌নিয়‌ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতা ও একটি দৈনিকের উপজেলা প্রতিনিধি।

 

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাঁর ওপর এই হামলা চালান। হামলায় আহত ধীমানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার পাকেরহাটে চরনকালী মন্দিরে সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার জেলার সব মণ্ডপে পূজার কার্যক্রম বন্ধ করে কালো পতাকা উত্তোলনের ঘোষণা দিয়েছে দিনাজপুর জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে খানসামা উপজেলা ছাত্রলীগের এক কর্মী মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক হন। সেই বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ধীমান ঘোষ। এতে ক্ষিপ্ত হন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক রেজাউল ইসলাম।

বুধবার বিকেলে উপজেলার চরনকালী মন্দির প্রাঙ্গণে উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভা শেষে করে রাস্তায় আসা মাত্রই রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগ কর্মী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ধীমান ঘোষের ওপর হামলা করেন। এর আগে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপজেলা শহরে ধীমান ঘোষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও করেন। ঘটনাস্থল থেকে আহত ধীমান ঘোষকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুজ্জোহা মুকুল বলেন, তাঁর (ধীমান ঘোষ) মাথায় দুটি সেলাই দিতে হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত।

এই ঘটনা পর উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহমেদ মাহবুবুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু হাতেম, খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কামাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এদিকে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মাদকের মামলা হয়। ধীমান ঘোষ সেই বিষয়টি লিখে ফেসবুকে শেয়ার করেন। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে ধীমান ঘোষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে আমি বিষয়টি মীমাংসা করতেই ঘটনাস্থলে যাই। হামলার সঙ্গে আমি জড়িত নই। তা ছাড়া আমি এখন ছাত্রলীগ করি না। আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।’

এদিকে দিনাজপুর জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার রায় অভিযোগ করেন, বিকেলে পুলিশের সামনে ধীমান ঘোষের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক রেজাউল করিম। এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জেলার সব মণ্ডপের পূজার কার্যক্রম বন্ধ করে কালো পতাকা উত্তোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না আনলে পরে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

জানতে চাইলে খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কামাল হোসেন বলেন, হামলার ঘটনায় আহত ধীমান ঘোষের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।

প্রথম আলো

মন্তব্য করুন