ফেইসবুকে ‘ধর্ম নিয়ে’ মন্তব্যের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক একটি ছাত্র সংগঠন।
ফরহাদ এইচ ফাহাদ নামের একটি ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে করা একটি মন্তব্যের স্ক্রিনশট গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। ‘মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করলে ব্রুনাইয়ে মৃত্যুদণ্ড’ শিরোনামে একটি খবর শেয়ার করে তার নিচে ওই মন্তব্য করা হয়েছে সেখানে।
এ নিয়ে ফেইসবুকে ফাহাদের শাস্তির দাবি তোলে একটি পক্ষ। এরপর উগ্রপন্থী ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ৭ এপ্রিল রোববার ক্যাম্পাসে মিছিল করে ফাহাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ফরহাদ হোসাইন ফাহাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কুরআনে হাফেজ এবং কওমি মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র। এখন আমি শিবির, মৌলবাদ- এগুলার বিরুদ্ধে লেখালেখি করি। আমার এ লেখালেখিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আমার নামে ফেইক আইডি খোলা হয় এবং ওই আইডি দিয়ে আমার বন্ধুদের সাথেও যোগাযোগ করা হয়।
“ফেইক আইডি থেকে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ কমেন্টগুলো করা হয়। এগুলো দেখে আমি হতাশ। পরবর্তীতে আমার রিয়েল আইডিতেও অনেক রিপোর্ট করা হচ্ছিল, তাই আইডিটি ডিঅ্যাক্টিভ করে দিয়েছি।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোস্তফা কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফাহাদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হচ্ছে। আমরাও ওর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত রিপোর্ট পেলেই অ্যাকাডেমিকভাবে ব্যবস্থা নেব।”
আর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মওদুদ হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। সেজন্য কাজ চলছে। ঊর্ধ্বতনদের মতামত পেলেই মামলা করা হবে।”
এদিকে ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক সংগঠন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের অবস্থান নিয়ে আপত্তি তুলে রোববার পাল্টা মিছিল করে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর কর্মীরা।
পরে তারা উপাচার্যের ভবনের সামনে সমাবেশে মিলিত হলে একদল তরুণ সেখানে তাদের ওপর হামলা চালায় এবং তাতে কয়েকজন আহত হন বলে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাদের অভিযোগ।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্টের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোনায়েম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সমাবেশের সময় কিছু ছেলে এসে আমাদের উপর হামলা করে। আমরা প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে তারা হামলার অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।