বগুড়ার ধুনটে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ এবং মুঠোফোনে ওই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে এক কলেজছাত্রসহ চার তরুণের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ২৩ মে রোববার দুপুরের দিকে ধুনট থানায় ওই ছাত্রীর মা মামলাটি করেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের এক কলেজছাত্র (২২) স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ওই ছাত্রী ও তার পরিবার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে ওই কলেজছাত্র ক্ষুব্ধ হন। গত ১৮ এপ্রিল বেলা তিনটার দিকে ওই ছাত্রী ওই কলেজছাত্রের বাড়ির পাশ দিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিল। এ সময় ওই কলেজছাত্র তাঁর তিন বন্ধুর সহযোগিতায় ওই ছাত্রীকে কৌশলে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। পরে তিনি একটির ঘরে আটকে রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ওই কলেজছাত্রের বন্ধুরা ঘরের জানালা দিয়ে মুঠোফোনের ক্যামেরায় ওই ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। পরে ধর্ষণের বিষয়ে কাউকে না জানানোর জন্য ওই ভিডিও ছাত্রীকে দেখানো হয়।
মামলার এজাহারসূত্রে আরও জানা গেছে, ঘটনার কয়েক দিন পর কলেজছাত্র ও তাঁর বন্ধুরা ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। বিয়ে এবং টাকা না দেওয়া হলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে তাঁরা ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা ওই কলেজছাত্রসহ চার তরুণের বিরুদ্ধে বগুড়ার একটি আদালতে মামলা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে এ বিষয়ে ধুনট থানার পুলিশকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দেন। আদালতের আদেশের ভিত্তিতে ধুনট থানা ওই আবেদন আজ রোববার দুপুরের দিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।
মামলার পর থেকে আসামিরা পলাতক। এ কারণে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণের অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার দীর্ঘদিন পর মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ছাত্রীর মা বলেন, প্রথমে বিষয়টি তাঁরা জানতেন না। পরে জানার পর ধুনট থানায় মামলা দিতে গেলেও পুলিশ নেয়নি। এ কারণে তিনি আদালতে মামলা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপাসিন্ধু বালা বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী আজ ওই ছাত্রীর মায়ের আবেদনটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ওই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওই ছাত্রীর মায়ের মামলা না নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই স্কুলছাত্রীর মা থানায় এ বিষয়ে মামলা করতে আসেননি।