নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় মন্দির চত্বরে গরু জবাই করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সেই দায় সংস্থার এক অধঃস্তন কর্মচারীর ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরেন্দ্রভূমি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (বিএসডিও) নির্বাহী পরিচালকের আদেশে ওই মন্দির চত্বরে গরু জবাই করা হয় বলে জানা গেছে।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মচারী সমন্বয়ক অর্থ ও প্রশাসন মো. আজিজার রহমান ১১ মে মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে আজিজার রহমান অভিযোগ করে বলেন, গত ১৩ এপ্রিল বিএসডিওর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বরাবরের মতো মাংস ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য একটি গরু কিনেন। গরুটি কোথায় জবাই করা হবে এ নিয়ে পরামর্শ করার এক পর্যায়ে বিএসডিওর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমানের মৌখিকভাবে মন্দির চত্বরে গরু জবাই করার সিদ্ধান্তের কথা নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রউফকে জানান। তাঁর মতামতের ভিত্তিতে সেখানে গরু জবাই করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, পরে এ নিয়ে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় ওই নির্বাহী পরিচালক এবং ওই কর্মকর্তা সম্পূর্ণভাবে সমন্বয়ক অর্থ ও প্রশাসনকে দায়ী করে নিজেরা দায়মুক্ত হন এবং তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য আজিজার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আজিজার রহমান একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং সংস্থাটির জন্মলগ্ন থেকে সম্পৃক্ত রয়েছেন। যার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ তার প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল।
বিএসডিওর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রউফ এবং ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আতাউর রহমান দাবি করেছেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুল খালেক স্থানীয় সুকেশ চন্দ্রকে বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে বলতে এবং সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করতে চাপ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ওই ইউপি সদস্য এ কথা অস্বীকার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গ্রামবাসীর মধ্যে বেলাল হোসেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগনেতা কনক কুমার মণ্ডল, আব্দুল খালেক সরদার, এস এম জাফর সাদেকসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী।
স্থানীয় ইউনিয়ন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগনেতা কনক কুমার মণ্ডল দাবি করেছেন, আজিজার রহমান হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত প্রিয় মানুষ। তিনি এই কাজ করতে পারেন না। নির্বাহী পরিচালকের নির্দেশেই সেখানে গরু জবাই করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে বিএসডিওর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রউফ এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান জানান, মন্দিরের জায়গায় গরু জবাই করতে কোনো মতামত দেননি। বরং আজিজার রহমান তাঁর নিজের মতেই এই কাজ করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে বিএসডিও জড়িত নয় বলেও তারা দাবি করেন।