সুনামগঞ্জের ছাতকে প্রেমের কারণেই নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বিকাশ কম্পানির কর্মচারী সানি সরকারকে (২৪)। সে পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মণ্ডলীভোগ (ঘোষবাড়ী) এলাকার বাসিন্দা কাজল সরকারের ছেলে।

 

হত্যা মামলার প্রধান আসামি শোয়েব আহমদ (২২) সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার বিবরণ তুলে ধরেন। শোয়েব উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

সানি হত্যার প্রধান আসামি শোয়েব বিজ্ঞ আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, প্রায় দুই বছর ধরে সানি সরকারের সঙ্গে দক্ষিণ মণ্ডলীভোগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়ার কন্যা ছাতক সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী শিপা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন সপ্তাহ আগে শোয়েবের সঙ্গে নতুন করে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে শিপা আক্তার। নতুন এই প্রেমের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সানি সরকার। বিষয়টি জানতে পেরে সানি ও শোয়েবের মধ্যে একাধিকবার বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।

গত ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে সানি সরকারকে ডেকে নেয় শোয়েব ও তার সহযোগীরা। সেখানে আবারও সানির প্রেমিকা শিপাকে নিয়ে ঝগড়া হয় দুজনের মধ্যে।

ঘাতক শোয়েব ও তার সহযোগীরা একপর্যায়ে সানি সরকারকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে ফেলে যায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়ার চার দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সানির মৃত্যু হয়।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সানির বাবা শোয়েবকে প্রধান আসামি করে এজহার নামীয় ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সানি হত্যার ঘটনার বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

প্রথম দিনেই মামলার ২ নম্বর আসামি দক্ষিণ বাগবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ইসলাম উদ্দিনের ছেলে নাইম আহমদ (২০) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সিলেট নগরীর মধুবন মাকের্টের পেছন থেকে শোয়েবকে গ্রেপ্তার করে ছাতক থানা পুলিশ। সানি হত্যার প্রতিবাদে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বুধবার শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে সর্বস্তরের মানুষ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে।

সানি হত্যার পর প্রেমিকা শিপা আক্তার তার পরিবার নিয়ে শহর ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার মিয়া বলেন, এই মামলার এজহার নামীয় দুই আসামি এখন জেলহাজতে। হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হলেও অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

কালের কণ্ঠ

মন্তব্য করুন