বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জাতীয় স্বার্থে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতাকে রাজনীতি ও নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার না করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পরিষদ একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা মোকাবিলায় কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্যও গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক শক্তির প্রতি আহ্বান জানায়।
জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল বুধবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও উপজাতিদের নিরাপত্তার কথা বললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। অথচ নির্বাচনকে সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে হলে নারী-পুরুষ ও ধর্ম নির্বিশেষে সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনেই ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে এর মাত্রা অনেক ভয়াবহ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পর সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক নির্যাতন নিপীড়ন বেড়ে গেছে। তারা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বদলি ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা কার্যত সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে উৎসাহিত করেছে এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদ দিয়েছে। এর ফলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে গিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে এনে জনগণের মধ্যে বিভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সন্ত্রস্ত করে ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দিয়ে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেজর জেনারেল (অবঃ) সি আর দত্ত, ড্যানিয়েল কোরাইয়া, অধ্যাপক ললিত মোহননাথ, অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক, ভদন্তু সুমঙ্গল মহাথেরো, অনিল চন্দ্র নাথ, সুব্রত চৌধুরী,বাসুদেব ধর, জয়ন্ত সেন দিপু, নির্মল চ্যাটার্জি প্রমুখ।
প্রথম আলো, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০১