নির্বাচনের পর নড়াইল জেলার বিভিন্ন গ্রামে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর একটি স্বার্থান্বেষী চক্র কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে শারীরিক-মানসিক অত্যাচার, বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও চাঁদা দাবীর সংবাদ পাওয়া যাইতেছে। জানা যায়, নড়াইল সদর থানার তারাসী গ্রামের নিতাই কর এবং কৃষ্ণপদ করকে এবং সিঙ্গা-হাড়িগড়া গ্রামের জেলে সম্প্রদায়ের ননী গোপাল ও বাবু বিশ্বাসের স্ত্রীকে কতিপয় সন্ত্রাসী কোপাইয়া জখম করে। নিতাইয়ের ঘরের টিনের চালা খুলিয়া ও কয়েক হাজার টাকার মাছ লুট করিয়া লইয়া গিয়াছে। বোড়ামারা হাইস্কুল ও বোদলা গ্রামের একটি হিন্দু বাড়ী হইতে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামাইয়া অবমাননা করা হইয়াছে। ইহা ছাড়া মাগুরা গ্রামের সুধাংশু ও ফনিভূষণকে মারধর করা হইয়াছে। এদিকে সন্ত্রাসীরা রামানন্দপুর গ্রামের অমর বিশ্বাসের গরু ও পুকুরের মাছ লুট করিয়া লইয়া গিয়াছে। এসব ঘটনা ব্যতীত জেলার নিভৃত পল্লীতে সংঘটিত অপ্রকাশিত ঘটনার সংখ্যা অনেক। ভয়ে অনেকে প্রকাশ করিতেছে না। জানমাল রক্ষার জন্য চাঁদা দিতে হইতেছে বহু সচ্ছল গৃহকে। গত ১৮ অক্টোবর নড়াইল জেলা আইনজীবী সমিতির ১৯ জন হিন্দু এডভোকেট স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, সুপরিকল্পিতভাবে জেলার হিন্দু সম্পদায়ের উপর যে অত্যাচার-উৎপীড়ন চলিতেছে তাহা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া নিরীহ হিন্দু সম্পদায়কে রক্ষা করিবার অনুরোধ জানানো হয়।
দৈনিক ইত্তেফাক, ২০ অক্টোবর ২০০১