পঞ্চগড়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে (১৯) ধর্ষণ এবং একই সময় ওই গৃহবধূর স্বামীকে (২২) ধর্ষণচেষ্টা করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চার তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

রোববার দিবাগত রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আজ সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত চার তরুণকে আসামি করে পঞ্চগড় সদর থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে একজনকে আসামি করে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (ধর্ষণের) মামলা করেছেন। তাঁর স্বামী পর্নোগ্রাফি আইনে আরেকটি মামলায় চারজনকে আসামি করেছেন। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের জয়নুল হক (২৫), রনি ইসলাম (২৪), নুর হোসেন (২১) ও শাহীন হোসেন (২১)।

পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তিকে (দিনমজুর) মুঠোফোনে ডেকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যান একই এলাকার জয়নুল হকসহ তাঁর সহযোগীরা। এ সময় তাঁকে চাওয়াই নদের ধারে নিয়ে যান তাঁরা। একপর্যায়ে জয়নুলসহ চারজন মিলে ওই ব্যক্তিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এই দৃশ্য তাঁরা ভিডিও ধারণ করেন। এমনকি ৫০ হাজার টাকা না দিলে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন।

এর একপর্যায়ে অভিযুক্ত জয়নুল হক ওই ব্যক্তিকে অপর তিন সহযোগীর কাছে রেখে তাঁর (ভুক্তভোগীর) বাড়িতে চলে যান। জয়নুল ওই ব্যক্তির ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র এলোমেলো করে টাকাপয়সা খুঁজতে থাকেন। এ সময় ওই ব্যক্তির স্ত্রীর ঘুম ভেঙে গেলে তাঁর মুখ চেপে ধরেন জয়নুল। এ সময় ওই গৃহবধূকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান জয়নুল। পরে ভোরে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি অপর তিনজনের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখেন তাঁর স্ত্রী কান্নাকাটি করছেন। পরে তাঁর স্ত্রীকে জয়নুল ধর্ষণ করেছেন বলে তিনি জানতে পারেন।

১২ জুলাই সোমবার সকালে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে জানালে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত চারজনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসেন এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পঞ্চগড় সদর থানা–পুলিশের হাতে তুলে দেন।

পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজিজার রহমান বলেন, সকালে ভুক্তভোগী পরিবারটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত চারজনকেই ডাকা হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানযোগ্য না হওয়ায় অভিযুক্তদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত জয়নুল হক ও রনি ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ কবির সোমবার সন্ধ্যায়  বলেন, এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগ এনে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে তাঁর স্বামী অপর একটি মামলা করেছেন। ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।

প্রথম আলো

মন্তব্য করুন