ফেনী শহরে তিন বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করার পর ঘর ছাড়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাদী।

 

এর আগে শহরের একাডেমীর বনানী পাড়া এলাকায় বস্তিতে এ ঘটনার শিকার শিশুর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযুক্ত শহীদুল ইসলামকে আসামি করে শুক্রবার থানায় মামলা করেন।

মামলার আসামি ওই বস্তিরবাসিন্দা শহীদুল ইসলাম রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।

শহরের একাডেমীর বনানী পাড়া এলাকার পুরাতন রেললাইন সংলগ্ন ডুবাই ট্রাস্টের বস্তিতে ভাড়া থাকেন স্বামী পরিত্যক্তা ওই শিশুসহ চার মেয়ের মা এ নারী। তিনি ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়াম সংলগ্ন ফারুক হোটেলের সামনে ভ্যানগাড়িতে সবজি বিক্রি করেন।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত শহীদুল ইসলামকে আসামি করে শুক্রবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করেছেন।

“পুলিশ প্রাথমিকভাবে শিশুটির জবানবন্দি গ্রহণ ও পরনের প্যান্ট উদ্ধার করেছে।”

এর আগে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নির্যাতিত শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।

“শুক্রবার বিকেলে সংগ্রহীত নমুনা পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।”

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ওই শিশুর মা জানান, দুই সপ্তাহ আগে তার তিন বছরের শিশুমেয়েকে একা পেয়ে প্রতিবেশী শহীদুল ইসলাম নামের এক রাজমিস্ত্রী ধর্ষণ করে। শিশুটি কিছু না জানাতে পারলেও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতচিহ্ন দেখে মায়ের সন্দেহ হয়। পরে তার পরনের প্যান্ট পেলে শিশুটি প্রতিবেশী শহীদুলের কথা মাকে জানায়।

ওই ঘটনায় সম্প্রতি অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘তার কাছে ক্ষমা চান এবং তিন হাজার টাকায় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়।’ পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিষয়টি থানায় জানিয়ে জিডি করেন তিনি।

শিশুটির মা অভিযোগ করে বলেন, “আমি থানায় জিডি করে আসার পর থেকে আমাদের বাসার মহিলারা আমাকে মারার হুমকি দিচ্ছে। আমার নামে উল্টো মিথ্যা মামলা দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছে।

“বস্তির ম্যানেজার আমাকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাকে যে তিন হাজার টাকা প্রদানের প্রস্তাব করেছিল, তা যেন আমি পুলিশকে বলি-সেটি আমার অভিযোগ মিথ্যা ছিল।”

এদিকে, ফেনী মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা আলামত সংগ্রহ করেছি, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। আসামিকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

মন্তব্য করুন