বান্দরবানের লামা উপজেলায় মিছিল করে এসে মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছে।
লামা থানার ওসির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মো. জুম্মা জানান, কুমিল্লায় মন্দিরে ‘কোরআন অবমাননার’ কথিত অভিযোগ এনে ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে ‘সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা’ ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল করে এসে এই হামলা চালানো হয়।
সে সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১২-১৩ জন আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে একজন এসআইসহ তিন পুলিশ সদস্যও আহত হন বলে জানান তিনি।
আহতদের উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সকালে এই সংঘর্ষ শুরুর পর তা থেমে থেমে দুপুর পর্যন্ত চলে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশপাপাশি সেনা ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
লামা বাজার হরি মন্দির কমিটির সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্দিরে প্রচুর ভাংচুর হয়েছে। কিন্তু আমাদের ছেলেদের চেষ্টায় প্রতিমাগুলো রক্ষা পেয়েছে। বাজার এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ভাংচুর হয়েছে।”
হামলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। ঘর থেকে বের হতে না পারায় ঠিক কয়টা ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে বলা যাচ্ছে না।”
লামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, “লামায় বাজারে একটি মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ঘরবাড়ি ওপর হামলা পর হিন্দু সম্প্রদায়ে লোকজন চরম আতঙ্কে রয়েছে। ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।”
সংঘর্ষের পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন লামার ইউএনও জাবেদ কায়সার।
জেলার পুলিশ সুপার জেরিন আক্তার বিডিনিউ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থতি এড়াতে প্রত্যেক মন্দিরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের পাশপাশি সেনা ও বিজিবি সদস্যও মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া জেলার সব এলাকায় আরও গভীর নজর রাখা হচ্ছে।”