মসজিদের সোলার প্যানেলের ব্যাটারি চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করেছেন ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন মাতবর।

 

এদিকে এ ঘটনা জানতে পেরে রাতেই পুলিশ সুপারের নির্দেশে ইউপি সদস্যসহ দু’জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। মামলা হয়েছে এ ঘটনায়। ২২ জুন সোমবার কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের মংলারকুটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা হলেন ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রাজু আহম্মেদ ও স্থানীয় মাতবর জাফর আহম্মেদ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় দু’সপ্তাহ আগে মংলারকুটি মসজিদের সোলারের ব্যাটারি চুরি হয়। মসজিদ সংশ্নিষ্টরা নানা জায়গায় খুঁজে সোলারের ব্যাটারি না পেয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্যাটারি চোর সন্দেহে ছনবান্ধা খলিসাকুড়ি গ্রামের জসীম উদ্দিনের ছেলে কিশোর মাহবুবুর রহমানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান ইউপি সদস্য রাজু, জাফর আলী মুন্সীসহ কয়েকজন। তারপর জাফর আলী মুন্সির বাড়ির আঙিনায় গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে অমানবিক নির্যাতন করা হয় তাকে। এতে সে চুরির বিষয়টি অস্বীকার করলে আরও বেশি করে নির্যাতন করা হয়। এ সময় তার কোমর থেকে পা পর্যন্ত বাঁশডলা দিয়ে বর্বর নির্যাতন করেন ইউপি সদস্য রাজু আহম্মেদ, পেলকু মুন্সীর ছেলে জাফর আলী মুন্সী, ফজল কবিরাজের ছেলে আয়নাল হক, আব্দুল জলিল, মৃত সোনাউল্লার ছেলে জাহান উদ্দিন, মৃত আলী আহম্মদের ছেলে আব্দুল হান্নানসহ অন্তত ১০-১২ জন।

এ সময় কিশোর মাহবুবুর রহমানের চিৎকারে তার মা মালেকা বেগম ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে তার সামনে আরও বেশি করে নির্যাতন চালানো হয়। তার মাকেও কিল-ঘুষি মারা হয়। এক পর্যায়ে নির্যাতনে কিশোর অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার মায়ের সঙ্গে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলে ছেড়ে দেন নির্যাতনকারীরা। পরে বাড়িতে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন।

এলাকাবাসী জানান, ওই কিশোর কেদার ইউনিয়নের সুবলপাড় গ্রামে তার মামার বাড়িতে থাকত। সোলারের ব্যাটারি হারানোর পর সে বাড়িতে আসে। এ কারণে ওই চুরির ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্নিষ্টতার সম্ভাবনা কম। প্রমাণ ছাড়া তাকে নির্যাতনের বিষয়টি অমানবিক এবং এর সুষ্ঠু বিচার হওয়া দাবি করেন তারা।

এদিকে ঘটনা জানার পরই কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খানের নির্দেশে সহকারী পুলিশ সুপার (ভূরুঙ্গামারী সার্কেল) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রাজু আহম্মেদ ও জাফর আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করেন। দু’জন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কচাকাটা থানার ওসি মামুন অর রশিদ।

সমকাল

মন্তব্য করুন