রংপুর জেলার ২টি নির্বাচনী এলাকা রংপুর-৫ আসন মিঠাপুকুর এবং রংপুর-২ আসন বদরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার সংখ্যালঘু ভোটারের বাড়ি বাড়ি গভীর রাতে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা গিয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়া এবং ভোট না দেয়ার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারপরেও যদি ভোট দিতে যায় তাহলে এর পরিণাম ভাল হবে না বলে হুমকি দেয়া হয়েছে। এতে করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিবার চরম আতঙ্কে রয়েছে। গত তিন দিন ধরে রংপুর-৫ আসন মিঠাপুকুর উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে জাপা (এ) ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে সহস্রাধিক মানুষ আহত হয়েছে। এ সময় দু’দলের নির্বাচনী কার্যালয় ও প্রতীক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগসহ চোরাগোপ্তা হামলার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুক্রবার সেনাবাহিনী মোতায়েন করায় বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের সাথে কথা বলে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মিঠাপুকুর উপজেলার দেউল মির্জাপুর, আফতা বাজার, পশ্চিম মুরাদপুর, দক্ষিণ মুরাদপুর, শিবের বাজার, ভগবতীপুর, কামেশ্বরপাড়া, মিঠাপুকুর সদরের কিছু এলাকা, গোপালপুর, মিলনপুর গ্রামগুলোতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২০ হাজার ভোটার রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানায়, মুখোশপরা কিছু সন্ত্রাসী গভীর রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিশেষ করে মহিলা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। জাপা (এ) ও জামায়াত সন্ত্রাসীরা একজোট হয়ে এসব অপকর্ম করছে। অন্যদিকে রংপুর-২ আসন বদরগঞ্জ উপজেলার কুমারপাড়া, চান্দামারী, আমরুল বাড়ি, কালিবাড়ি, ব্রাফলপাড়া এলাকাগুলোতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব এলাকার অধিবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেল ঘটনার সত্যতা। তবে কেউ নাম প্রকাশে রাজি নয়। রংপুরের এ দু’টি আসনে মূলত আওয়ামী লীগ ও জাপা (এ) প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় চায় নিরাপত্তা। এর নিশ্চয়তা না পেলে অনেকেই ভোট দিতে যাবেন না বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।

সংবাদ, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০১

মন্তব্য করুন