ছাত্রদের ধর্ষণে ভয়ানক নেশা তার। এই বিকৃত নেশায় এমনই আচ্ছন্ন ছিল এই ব্যক্তি যে দুবাই থেকে ফিরে শিশুদের জন্য মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরে হোস্টেল সুপার হয়ে যায়। এরপর কোমলমতি ছাত্রদের নির্যাতনের মাধ্যমে বাধ্য করতো তার ইচ্ছাপূরণ করতে। আর কবে কোন ছাত্রকে ধর্ষণ করবে সেজন্য রুটিন বানিয়ে ছিল মাদ্রাস শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন (৩৫)।

 

আদালতে এসব তথ্য স্বীকার করেছে নাছির নিজেই। ছাত্রদেরকে ধর্ষণ করার অভিযোগে সোমবার (১৯ অক্টোবর) রাতে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার একাধিক ছাত্রের পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ওই রাতে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) গ্রেফতার নাছির উদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে তিনি জানান।

মাদ্রাসাছাত্রদের বলাৎকারের অভিযোগে গ্রেফতার শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন।

নাসির উদ্দিন কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার ছোট বেউলা এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। সে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার আহমদিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসার হোস্টেল সুপার হিসেবে কাজ করছিল।

আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘শিক্ষক নাছির উদ্দিন ছোট ছেলে শিশুদের প্রতি প্রবল যৌনাসক্ত ছিল। শিক্ষকতার মহান পরিচয়ের আড়ালে এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার ছাত্রদের ধর্ষণ করে আসছে। কোনও ছাত্র রাজি না হলে বা প্রতিবাদ করলেই তার ওপর নেমে আসতো ‘হুজুরের’ নির্যাতনের খড়্গ। নানা অজুহাতে ক্রমাগত মারপিটের শিকার হওয়ার পর বাধ্য হয়েই হুজুরের শয্যাসঙ্গী হতে রাজি হয়ে যেত কোমলমতি শিশুরা। সম্প্রতি তার হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার চার ছাত্রের পরিবার রাঙ্গুনিয়া থানায় অভিযোগ করেন। তাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে তিনি শিশু বলাৎকার করার কথা স্বীকার করে নেন। একই দিন ধর্ষণের শিকার চারজন ছাত্র আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে তাদের ওপর নাছিরের নৃশংস নির্যাতনের বর্ণনা দেয়।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৫ বছর দুবাই থাকার পর মূলত এই শিশু ধর্ষণের আসক্তিই তাকে মাদ্রাসা শিক্ষকতার পেশায় টেনে আনে। শিক্ষকতায় নিয়োজিত থেকে অদ্ভুত উপায়ে সে তার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে চলে। নির্যাতনের শিকার হয়ে তার প্রস্তাবে ‘রাজি’ হওয়া ছাত্ররা পালাক্রমে শয্যাসঙ্গী হিসেবে তার মনোরঞ্জনে বাধ্য হতো। এমনকি এই শিক্ষক রুটিনের মতো করে রাখতো, কে কবে তাকে বিছানায় সময় দেবে।

পুলিশ আরও জানায়, তার ছেলেশিশু আসক্তির এই বিকৃত রুচির কথা জানতে পেরে ২০১৮ সালে তার স্ত্রী একমাত্র সন্তানসহ তাকে ছেড়ে চলে যায়।

বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন