বাংলাদেশে গত সাধারণ নির্বাচনে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ‘নৃশংস ও হুমকির মুখে’ কিছু হিন্দু পরিবার ভারতে পালিয়ে গেছে। তবে সরকার এসব হিন্দু পরিবারকে দেশে ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক। কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাঃ তৌহিদ হোসেন গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা এএফপির কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কথা ̄স্বীকার করতে গিয়ে উপরোক্ত মন্তব্য করেন। ডেপুটি হাই কমিশনার বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি যে, নৃশংসতা ও হুমকির মুখে কিছু হিন্দু পরিবার সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।’ কিন্তু এটি ছিল আইন শৃঙ্খলা সমস্যা। সরকার পরিবর্তনের সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে রাজনীতির লেবাসধারী কিছু দুর্বৃত্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার অপচেষ্টা চালায়। তবে সরকার এদের অপ-তৎপরতা দমনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। ডেপুটি হাইকমিশনার বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর এই হামলা দুঃখজনক। তবে গত সপ্তাহ থেকে এ ধরনের আর একটি ঘটনাও ঘটেনি। এর আগে ভারতীয় পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের খবর প্রকাশিত হওয়ায় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একে স্রেফ প্রপাগান্ডা বলে নাকচ করে দেয়। দক্ষিণপন্থী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গত সপ্তাহে দাবি করে, গত মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪০ হাজার বাংলাদেশী হিন্দু ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। হিন্দুরা ভারতে বাংলাদেশ মিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্র বিএনপির বিজয় লাভের পর বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশে হিন্দুদের ভবিস্যৎ অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ডেপুটি হাইকমিশনার তৌহিদ হোসেন আরো বলেন, হিন্দুরা দেশে ফিরে গেলে বাংলাদেশ তাদের স্বাগত জানাবে। এ ক্ষেত্রে ভারতে চলে যাওয়া বাংলাদেশীদের একটা তালিকা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তৌহিদ হোসেন বলেন, গণমাধ্যমেই কেবল দেখানো হয়েছে যে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা পশ্চিমবঙ্গে পাড়ি জমিয়েছে। তবে ভারত থেকে এ ব্যাপারে এখনো কিছুই জানানো হয়নি।

প্রথম আলো, ১০ নবেম্বর ২০০১

মন্তব্য করুন