কেন্দ্রীয় ১১ দলের পরিচালনা পরিষদের সভায় অবনতিশীল সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে অবিলম্বে তা নিরসন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানানো হয়। গতকাল শনিবার গণফোরামের সাধারন সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিকের সভাপতিত্বে ১১ দলের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, গত ১ অক্টোবরের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের ওপর হামলা-নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংখ্যালঘুরা নিজ ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের কেউ কেউ দেশত্যাগও করছে। সামনে সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা পালনের ব্যাপারে তারা নিরাপদ বোধ করছে না। জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদ ইতোমধ্যেই পূজা অনুষ্ঠানে আড়ম্বর বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ক্ষুন্ন এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্পর্কের মধ্যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করবে। প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ১ অক্টোবরের নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি এসব ঘটনার দায় দায়িত্ব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর রেখেছিল; কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণ করার পরও তারা এ বিষয়ে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উপরন্তুু অতীতের মতোই বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর এসব হামলার খবরকে অতিরঞ্জিত এবং একটি দল ও সম্প্রদায়ের প্রচার বলে অভিহিত করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যে কেবল সত্যের অপলাপই নয়, তার এ বক্তব্যের ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়বে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য রক্ষায় এ সব সাম্প্রদায়িক হীন তৎপরতার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক সকল শক্তিকে ঐক্য বদ্ধ হওয়ার জন্য প্রস্তাবে আহ্বান জানানো হয়। ১১ দলের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাশেদ খান মেনন, বিমল বিশ্বাস, মঞ্জুরুল আহসান খান, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নির্মল সেন, আজিজুল ইসলাম খান, দিলীপ বড়ুয়া, ফজলুলহক রিপন, তোফাজ্জল হোসেন, মোর্শেদ আলি, আবু হামেদ সাহাবুদ্দিন, বজলুর রশীদ ফিরোজ, মোস্তফা আহমদ ও হাজী আবদুস সামাদ।
সংবাদ, ১৪ অক্টোবর ২০০১