সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার একজন ট্রান্সজেন্ডারের পরিবারকে সালিশে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

গত ১৩ এপ্রিল উল্লাপাড়ার চরঘাটিনা গ্রামে সালিশে এক মাসের মধ্যে ওই পরিবারকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী জানান, ‘১৫ বছর বয়স থেকে তার শরীরে পরিবর্তন শুরু হয়। এর পর থেকে গ্রামের কেউ আর তার সাথে মিশতে চায় না। সবাই তাকে ঘৃণা করতে শুরু করে। এলাকা ছেড়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের সাথে সময় কাটালেও ক্ষান্ত হয়নি গ্রামের মানুষ। পরিবারের উপর নেমে আসে সামাজিক নির্যাতন, পরিবারকে এলাকায় প্রায়ই তিরস্কারের শিকার হতে হয়। গত ১৩ এপ্রিল গ্রামের মাতব্বরসহ গ্রামের কয়েকজন মিলে সালিশ ডাকেন। এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়ে বাড়ি- ঘর বিক্রি করে পরিবারকে এলাকা থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন তারা।’

তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার গ্রাম থেকে চলে যেতে না চাওয়ায়, গত দুই দিন আগে আমার বড় ভাইকে ডেকে নিয়ে হুমকি ধামকি দেওয়া হয় এবং মারধর করে এলাকা থেকে চলে যেতে হুমকি দেওয়া হয়।’

উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক কুমার বলেন, সালিশে এলাকা ছাড়া করার নির্দেশ দেওয়াসহ হুমকি ধামকির অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবার গ্রাম্য প্রধান মাতব্বরসহ ১১ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার মামলা করে।

মামলার পর ওই গ্রাম থেকে মাতব্বর মনটু আলম ‌ও মেছের আলীকে ২৭ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান ওসি।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মউদুদ আহমেদ  বলেন, সরকার মুজিব বর্ষে দেশের ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের বঞ্চিতদের আবাসস্থল গড়ে দেওয়াসহ পুনর্বাসনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তাদের জন্য প্রথম সরকারি আবাসন গড়ে উঠেছে উল্লাপাড়া উপজেলায়।

এ অবস্থায় যেসব মানুষ ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের গ্রাম ছাড়া করার চেষ্টা করছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। আইনগতভাবে গ্রাম্য মাতবরদের এরকম কোনো সালিশ বৈঠক করার বৈধতা নেই বলেও জানান ইউএনও।

দ্য ডেইলি স্টার

মন্তব্য করুন