সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চৈত্রহাটি গ্রামে অবস্থিত শ্রী শ্রী জগদেশ্বরী মাতা মন্দিরের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

 

এ নিয়ে স্থানীয় আদিবাসীদের সাথে ভূমিগ্রাসীদের প্রায়ই ঘটছে সংঘর্ষ। এ বিষয়ে সরেজমিনে খোঁজ নিতে জাতীয় পর্যায়ের সাতটি বেসরকারি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের সাথে কথা বলেছেন।

শ্রী শ্রী জগদেশ্বরী মাতা মন্দিরের সভাপতি হৃদয় মুন্ডা জানান, সিএস রেকর্ডে শ্রী শ্রী জগদেশ্বরী মাতা ঠাকুরানীর নামে ৩৪২.১১ একর সম্পত্তি মধ্যস্বত্ব চিরস্থায়ী দেবোত্তর সম্পত্তি রেকর্ডভূক্ত হয়। এসএ রেকর্ডে স্থানীয় নায়েব প্রফুল্ল নন্দীসহ কয়েক ব্যক্তি জালিয়াতি করে মন্দিরের বেশ কিছু সম্পত্তি তাদের নাম রেকর্ডভূক্ত করে নেয়। পরবর্তীতে আরএস রেকর্ডে শতাধিক বিঘা সম্পত্তি মন্দিরের বিগ্রহের নামে রেকর্ডভূক্ত হলেও তা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে তালিকা অন্তর্ভূক্ত হয়। এ সুযোগে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আলতাব হোসেন ও দেলবার হোসেন গং ওই সম্পত্তি দখলে তৎপর হয়ে ওঠে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে হামলা মামলা। নির্যাতন ও মামলায় নিঃস্ব হয়ে পরেছে চৈত্রহাটি গ্রামের মুন্ডা গোত্রের ৪৫টি পরিবার।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, উল্লাপাড়া শাখার উদ্যোগে গত ১৫ অক্টোবর চৈত্রহাটি শ্রী শ্রী জগদেশ্বরী মাতা মন্দিরের বেহাত হওয়া সম্পত্তি উদ্ধার, মন্দিরে চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার, বিগ্রহ চুরি, ভূমিদস্যু কর্তৃক মন্দিরের জায়গা জমি দখল, মিথ্যা হত্যা মামলা, নির্যাতন ও নিপিড়নের বিরুদ্ধে ১০ দফা দাবি নিয়ে সিরাজগঞ্জ ডিসি অফিস ঘেরাও ও স্মারকলিপি প্রদান করে। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে জাতীয় পর্যায়ের এসব সংগঠনের নজরে আসে।

প্রতিনিধি দলের সমন্বয়কারী রুলি ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তারা চৈত্রহাটি পরিদর্শন করে ঘটনার পজিটিভ চিত্র পেয়েছেন। ২ নভেম্বর সোমবার তারা সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেড জেড মো. তাজুল হুদা, উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান মওদুদ আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদ রহমান খান, সহকারী জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. গোলাম রাব্বী ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. রওশন কবীরের সাথে বৈঠক করেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের কে আশ্বাস দেওয়া হয় মন্দিরের সম্পত্তি রক্ষায় ও আদিবাসীদের নিরাপত্তায় সবধরনের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, চৈত্রহাটি শ্রী শ্রী জগদেশ্বরী মাতা মন্দিরের সম্পত্তি নিয়ে সিরাজগঞ্জ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাড. সুকুমার চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ২০১২ সালে অর্পিত সম্পত্তি ট্রাইবুন্যাল আদালতে অবমুক্তি চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি চ্যালেঞ্জ করে পারিবারিক মন্দির হিসেবে প্রলয় কুমার নন্দী গঙ অপর আরেকটি মামলা করেন। বর্তমানে দুটি মামলাই বিচারাধীন রয়েছে।

কালের কণ্ঠ

মন্তব্য করুন