সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় স্টাইল করে চুল ও দাড়ি কাটার ‘অপরাধে’ ৫ হিন্দু তরুণকে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের শিকার এক তরুণ ৯৯৯ নম্বরের ফোনে অভিযোগ করলে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ১২ মার্চ শুক্রবার রাতে তিনজন কে গ্রেফতার করেছে।

 

শনিবার (১৩ মার্চ) জগন্নাথপুর থানায় নির্যাতিত এক তরুণ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের শনিবার জেল হাজতে পাঠায়।

এলাকাবাসী ও জগন্নাথপুর থানা পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার ২নং পাটলী ইউনিয়নের সমসপুর গ্রামের পরিমল শব্দকরের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদিতে তার ভাতিজা ভূবেশ কর, সুবেন্দ্র কর, সুবাস কর,নয়ন কর ও তার ভাই হৃদয় কর, প্রতিবেশী তরুণ আনসার সদস্য লিপন দাস রসুলগঞ্জ বাজারের লোকনাথ হেয়ার ড্রেসারে শুক্রবার সন্ধ্যায় চুল ও দাড়ি কাটছিল। এ সময় সেলুনে আসা মইজপুর গ্রামের সিরাজ মিয়া, লোহারগাঁও গ্রামের ফুল মিয়া, পাটলী চক গ্রামের আনর মিয়া, আব্দুল্লাহপুর গ্রামের শাহীন মিয়া, পাটলী চক গ্রামের আতাউর রহমান ও আনার মিয়া তাদেরকে স্টাইল করে চুল কাটা এবং হিন্দুছেলে দাড়ি রাখছে কেন বলে বিদ্রুপ ও কটূক্তি করে। এনিয়ে কথা কাটাকাটি হলে যুবকদের পিটিয়ে জোরপূর্বক মাথা ন্যাড়া করে দাড়ি ফেলে দেওয়া হয়। বিষয়টি নির্যাতিত এক যুবক রাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ করলে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সিরাজ মিয়া,আনর মিয়া ও শ্যামল মিয়া কে আটক করে।

ঘটনায় হতবিহ্বল তরুণ ভূবেশ শব্দকর বলেন, এমন বর্বর ঘটনায় আমরা হতাশ। তিনি বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ সাতজনের মধ্যে ৫ জনকে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতন করা হয়। আমি ও আমার সাথে থাকা সুবেন্দু কর কে হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনায় নির্যাতনের শিকার আনসার সদস্য লিপন দাস বলেন, এরা এলাকার চিহ্নিত মাস্তান। আমরা নিরীহ হিন্দুসম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় আমাদেরকে পিটিয়ে চুল ও দাড়ি কেটে দেয়। আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ তিনজনকে রাতে গ্রেফতার করে। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় শনিবার অভিযুক্ত সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।

জগন্নাথপুর থানার সেকেন্ড অফিসার রাজিব রহমান জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তিন জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে । অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাংলা ট্রিবিউন । প্রথম আলো

মন্তব্য করুন