‘ভোট’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করা হয়েছে, বর্তমানে সারা দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপকতা ১৯৭১ সালকেও হার মানিয়েছে। এ জন্য ‘ভোট’ নেতৃত্ববৃন্দ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বর্তমান সরকারের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করেন। খুলনার, বাগেরহাট, মংলা, সাতক্ষীরা ও যশোর, বরিশাল, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, রামশীল, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, ভোলা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, সন্দীপ, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ ও পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসে ভোট অবজারভেশন এন্ড ট্রান্সপারেন্সি এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভোট)-এর পরিদর্শক টিম এ প্রতিবেদন তৈরি করেন। প্রতিবেদনে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রোকেয়া কবির, মাহফুজা খানম ও জিয়াউল আহসান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হুমকি ও নির্যাতন চলছিল। নির্বাচনের পর এ নির্যাতন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ফলে নারী ধর্ষণ, বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হাত-পা কেটে ফেলা, চাঁদাবাজি, দেশছাড়া করার হুমকি ইত্যাদির ফলে ব্যাপকসংখ্যক নাগরিক আজ দেশের ভেতরই উদ্বাস্ত। এমনকি দেশছাড়া হয়েছে অনেকেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচনপূর্ব এবং নির্বাচনোত্তর এ সহিংসতা রোধ করতে শুধু ব্যর্থই হয়নি-এ সহিংসতা রোধে তাদের কোনো উদ্যেগই ছিল না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তিই এর সাক্ষ্য দেবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর রাজনৈতিক কারণে সাম্প্রদায়িক যে সহিংসতা চলছে তার প্রতিকারে কোনো সক্রিয় উদ্যেগ না নেওয়ায় এর ভয়াবহতা এখনো চলছে। নেতৃত্ববৃন্দ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য বিগত বিএনপি শাসনামলে ১৯৯৫ সালের ইয়াসমীন ধর্ষণ ও হত্যার পর ঐ সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন নেতৃত্ববৃন্দ।
ভোরের কাগজ, ২১ অক্টোবর ২০০১