ঢাকার উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জের একটি সংখ্যালঘু পরিবার সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেছে যে, কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর গ্রামে তাদের বসতবাড়ি বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং সন্ত্রাসীরা ওই বাড়ি অবৈধ দখলের জন্য পরিবারের সকল সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা গ্রহণ করেনি। ফলে তারা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী) আদালত ‘খ’ অঞ্চল ঢাকায় মামলা করেছেন। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আহূত এই সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাড়ির মালিক গোপাল চন্দ্র সরকার। এ সময় তার বড় ছেলে বলরাম সরকার এবং অন্য আত্মীয়স্বজন হরিগোপাল সরকার ও স্বপন কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসীরা তার পিতৃ পুরুষের বসতবাড়ির মালিকানা দাবি করে সেখানে অবৈধ সাইনবোর্ড ব্যাপন করেছে এবং বাড়ির সবাইকে প্রায় অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এ অবস্থায় তার গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তিনি জানান, সন্ত্রাসীরা অবৈধভাবে তার বাড়ি দখলের পর বিভিন্ন ধরনের ১০৫টি গাছ কেটে ফেলে এবং দর্জি কারখানার দুটি ফ্যান, বেশ কিছু কাপড় এবং বেড়া দেয়া বাড়ির সীমানার টিন, সিমেন্টের খাম লুট করে নিয়ে যায় এবং কয়েকটি ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। গোপাল চন্দ্র সরকার জানান, কেরানীগঞ্জ থানা তার ডায়েরি গ্রহণ না করায় তিনি ঢাকা জেলা ‘খ’ অঞ্চলে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী) আদালতে মামলা করেছেন। মামলায় ১৩ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার সাক্ষী রয়েছেন ১৪ জন। মামলায় বলা হয় গত ১৮ জানুয়ারি সন্ত্রাসীরা অস্ত্রসস্ত্র সজ্জিত হয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে এবং সাক্ষীদের এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মারে এবং মহিলাদের গায়ে হাত দিয়ে অশোভন আচরণ করে ও লাঠি দিয়ে পিটাতে থাকে। আসামী সেলিম ও ফারুকের নির্দেশে অন্যান্য আসামীরা এই অত্যাচার চালায়। এক প্রশ্নের জবাবে গোপাল চন্দ্র সরকার জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য আমানউল্লাহ আমানকে বিষয়টি জানানো হয়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয় বিএনপি সভাপতি নাজিমউদ্দিনকে জানালে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনিই মীমাংসা করে দেবেন। এই ছোট বিষয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রীকে জানানোর প্রয়োজন নেই। গোপাল চন্দ্র সরকার তার বাড়িতে হামলাকারীরা স্থানীয় ছাত্রদলের নেতা-কর্মী বলে জানান।
দৈনিক জনকণ্ঠ, ২১ জানুয়ারি ২০০২