বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননার অভিযোগে ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমির প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে এ সংক্রান্ত চিঠি অভিযুক্তের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিপুল চন্দ্র দাস।
একই অভিযোগে শুক্রবার বিকালে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন একই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফুল্লশ্রী গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদারের ছেলে খায়রুল বাশার বাপ্পি। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নকিব আকরাম।
যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাকাল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
ইউএনও বলেন, ‘ভেগাই হালদার পাবলিক অ্যাকাডেমির মেয়েদের কমনরুমের টয়লেটের দরজার ওপরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানানো হয়। ছবি দুটি সরানোর জন্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বারবার প্রধান শিক্ষককে অবহিত করলেও তা সরাননি তিনি। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ওই ছবি সরানোর দাবিতে এবং প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানার পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি অবমাননার সত্যতা পেয়ে শুক্রবার প্রধান শিক্ষককে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেন। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে।’
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নকিব আকরাম বলেন, ‘ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী খায়রুল বাশার বাপ্পি বাদী হয়ে যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ছবি অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, স্কুলের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, আগে ওই কক্ষটি শিক্ষক মিলনায়তন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। দুই মাস আগে কক্ষটির মাঝ বরাবর হার্ডবোর্ড দিয়ে দুটি কক্ষ করা হয়। একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং অপর কক্ষে ছাত্রী কমনরুম। ছাত্রী কমনরুমের মধ্যে চলে আসে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি; যা কমনরুমের টয়লেটের ওপর শোভা পায়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ছবি দুটি সরানোর জন্য প্রধান শিক্ষককে বললেও সময়ক্ষেপণ করেন তিনি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।