সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়ে অর্থ আত্মসাত ও গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন শ্যামনগর উপজেলার শৈলখালী গ্রামের ওই নারী।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,“ চাকরির সুবাদে আমার স্বামী প্রায়ই বাড়ির বাইরে থাকেন। স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম প্রায়ই আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতেন। এক পর্যায়ে হত-দরিদ্রদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আমাকে একটি সরকারি ঘর তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান। এর জন্য তিনি আমার কাছে ৫০ হাজার টাকাও চান।

“আমি বিশ্বাস করে শৈলখালী গ্রামের পিয়ার আলী মল্লিকের ছেলে এমএম সিরাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে চেয়রম্যানকে ৫০ হাজার টাকা দেই। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও তৈরি করে না দিয়ে তালবাহনা শুরু করেন চেয়ারম্যান। একপর্যায় আমার প্রতিবেশী এক নারীকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের জন্য আমার মাধ্যমে প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, “কিন্তু আমি অপারগতা প্রকাশ করলে চেয়ারম্যান আমাকে এ প্রস্তাব দেন এবং তার বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। পরে বিষয়টি অমার স্বামীকে জানালে তার পরামর্শে চেয়ারম্যানের মোবাইল কল রেকড করি।

“গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকালে আমার ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে বলেন। তার কথায় বিশ্বাস করে আমি সেখানে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় আমি দৌড়ে পরিষদের বাইরে চলে গেলে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী শাহীন আলম আমাকে এ ঘটনা কাউকে জানালে স্বামী ও সন্তানকে হত্যা এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেন।”

সংবাদ সম্মেলনে ওই গৃহবধূ আরও বলেন, “চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম ও তার সহযোগিরা আমার ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেয়নি উল্টো আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করল। এখন আমার স্বামী সন্তানসহ আমাকে খুনের হুমকি দিচ্ছে। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

তিনি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ সময় তার স্বামী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের কার্যালয়ে গিয়েও পাওয়া যায়নি। তার সব সকল মোবাইল নম্বরও বন্ধ ছিল।

পরে চেয়ারম্যানের সহযোগী শাহীন শাহীন আলমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘মামলা হয়েছে, খুব বিপদে আছি’- বলে ফোন বন্ধ করে দেন। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায় নি।

এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

মন্তব্য করুন