নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছাত্রীটির মা বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পার্শ্ববর্তী নান্দাইল উপজেলার ঝাউগড়া গ্রামের মৃত আবেদ আলী মুন্সীর ছেলে। চাকরির সুবাদে মাদরাসার নিকটবর্তী রোয়াইলবাড়ি (তাঁতিপাড়া) গ্রামের ওমর ফারুকের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন। গত ১৮ জুলাই তিনি উপবৃত্তি ফরমে স্বাক্ষর করার কথা বলে মাদরাসা ছাত্রী নান্দাইল উপজেলার সুন্দাইল গ্রামের দোয়াত মিয়ার মেয়ে শারমিন আক্তারকে ডেকে আনেন। অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান ছাত্রী শারমিন আক্তারকে তাঁতিপাড়া গ্রামের ভাড়া বাড়িতে ডেকে আনার পর তিনি কৌশলে নিকাহনামা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। এতে অপারগতা প্রকাশ করে ছাত্রীটি। এ সময় অধ্যক্ষ তার যৌন কামনা চরিতার্থ করতে ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে ছাত্রীটির ডাক-চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণের কবল থেকে উদ্ধার করে। এরই মধ্যে ঘটনাটি গোপন রেখে গত ১০ আগস্ট শারমিন আক্তারকে বিয়ে দিয়ে দেন পরিবারের লোকজন। বিয়ের খবর শুনে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায় অধ্যক্ষ সাইদুর। এমনকি বিয়েটি ভেঙে দিতে তিনি শারমিনের পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করে। এ অবস্থায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর শারমিন আক্তারের মা শিপন আক্তার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর গত ২২ সেপ্টেম্বর মাদরাসার গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধ্যক্ষ সাইদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। এদিকে মাদরাসা ছাত্রী শারমিনকে নিজের স্ত্রী দাবি করে ময়মনসিংহ আদালতে একটি মামলা করেছেন অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান।
এ বিষয়ে মাদরাসা ছাত্রী শারমিন আক্তারের সঙ্গে কথা হলে বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইদুর রহমানের সাথে আমার কোনো রকম সম্পর্ক নেই। তিনি উপবৃত্তি ফরমে স্বাক্ষর করার কথা বলে আমাকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মামলা করার পর থেকে তিনি আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছেন এবং আমার বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ রটাচ্ছেন।
এ নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কেন্দুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জানান, মামলাটির তদন্ত কাজ চলছে। মাদরাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পুলিশ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।