নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ কিন্তু সংখ্যালঘুদের ওপর তার কোন প্রভাব পড়েনি। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় সহ পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়িসহ শতাধিক ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য যে, সংসদ নির্বাচনী ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিকটাত্মীয় (বঙ্গবন্ধুর ভাগনে ইলিয়াস চৌধুরীর ছেলে)।

নির্বাচনে বিজয়ের খবর পাওয়ার পর ভাঙ্গার হামিরদি ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে গত রবিবার রাত ৯টার দিকে স্বতন্ত্র সাংসদের সমর্থকরা হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ৫/৬টি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। একই সময় উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খসরু মুন্সীর বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। হামলা হয় এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে। রাত ১০টার দিকে আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামে ৪/৫টি বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। রাতে ভাঙ্গা পৌরসভার কৈডুবি ও সদরদী মহল্লায় আওয়ামী লীগ সমর্থক আতিকুর শেখ, দেলোয়ার শেখ, আবু শরিফ, আসমত শেখ এবং মনিরুলের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করা হয়। সোমবার ভোর ৬টার দিকে চুমুরদি ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামে ইয়াদ আলী ফকির ও গফুর শেখের বাড়ি হামলা করে ভাংচুর করা হয়। সকাল ৭টার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার ছিলাধরচর মহল্লার রশিদ মিয়ার বাড়ি ও গ্যারেজ ভাংচুর করা হয়। সকালে কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মাইঝাইল গ্রামে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ভাংচুরের ঘটনা ঘটে কাউলিবেড়া ইউনিয়নের খাটরা ও কালামৃধা ইউনিয়নের আটরা ভার্ষা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে ভাংচুর করা হয় ভাঙ্গা পৌরসভার কোর্টপাড় এলাকার বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হকের বাড়ি। এছাড়া সদরপুর উপজেলার চরমানাই ইউনিয়নের চরমানই গ্রামে সকালে কয়েকটি বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এ ইউনিয়নে দুই পক্ষের টানটান উত্তেজনার মধ্যে পুলিশ অভিযান করে স্বতন্ত্র সাংসদ সমর্থক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল হোসেন ও আনিসুর রহমানকে গ্রেফতার করে।

কাজী জাফরউল্যাহর সমর্থক ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী বলেন, এ এলাকার মানুষের কষ্টের কোনো সীমা নেই। নৌকায় ভোট দিয়ে তাদের মার খেতে হচ্ছে। নৌকায় ভোট দেওয়াই যেন তাদের অপরাধ। যেন তাদের দেখার কেউ নেই।

ফরিদপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা সমকালকে বলেন, নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার অভিযোগে এ পর্যন্ত ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন এবং চরমানাই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ ভাঙ্গা ও সদরপুর থেকে আটজনকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে ভাঙ্গা ও সদরপুর পরিদর্শন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভাঙ্গায় সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী এলাকায় টহল দিচ্ছেন বিজিবি ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ থাকা স্বত্তেও এই যে হামলা করা হলো এর বিচার হবে কি? বিশেষ করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যখন স্বয়ং বঙ্গবন্ধুর ভাগনে ইলিয়াস চৌধুরীর ছেলে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন নাকি উন্নয়নের স্বার্থে পাশ কাটিয়ে যাবেন?

সূত্রঃ সমকাল | জনকন্ঠ

 

মন্তব্য করুন